লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে জেলা পুলিশ: চেক পোস্ট ২৭টি

লকডাউন বাস্তবায়নে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্রামে গ্রামে করছে মাইকিং। বিতরণ করেছেন সচেতনতামূলক লিফলেট। নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন প্রায় লক্ষাধীক করোনা সুরক্ষা সামগ্রী। জেলার বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করছে হাত ধোয়ার বেসিন। কর্মহীনদের জন্য দিয়েছেন খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা। করোন মোকাবেলায় জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি ক্ষেত্র বিশেষে আইন প্রয়োগ করে হলেও সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি সাতক্ষীরা পুলিশ এসব সেবামূলক কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানা যায়, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলায় ৮টি থানা এলাকায় মোট ২৭টি চেক পোস্ট রয়েছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর থানা এলাকায়ই রয়েছে ৯টি চেক পোস্ট। বাকি ৭টি থানা এলাকায় রয়েছে ২টি করে মোট ১৪ টি চেক পোস্ট। এছাড়াও জেলার সীমান্ত এলাকায় রয়েছে বিশেষ ৪টি চেক পোস্ট। বিশেষ চেকপোস্টগুলো কলারোয়ায় থানা এলাকায় ১টি, তালায় থানা এলাকায় ১টি এবং আশাশুনি থানায় এলাকায় ২টি চেক পোস্ট। এসব চেক পোস্টে প্রায় ৫ শতাধিক পুলিশ সদস্য রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। এ কাজ নিয়োজিত থাকা অবস্থায় জেলায় এ পর্যন্ত ৮০জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে আরও ১০ জন পুলিশ সদস্য।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায়ও পুলিশ মাঠে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সকাল থেকে চেক পোস্টে কাজ করে যাচ্ছে বিরামহীনভাবে। করোনা সংকটে যখন কেউ পাশে থাকে না, তখন পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। করোনায় মৃত্যুর পর লাশ দাফন ও সৎকারের কাজও করছে পুলিশ। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, লিফলেট বিতরণ, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সচেতনতা মূলক মাইকিং, খাদ্য ও অর্থ সহায়তা বিতরণসহ নানামুখি কার্যক্রম পরিচালন করে যাচ্ছে। করোনার শুরু থেকে আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার পরিচয় দেয় সাতক্ষীার পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় পুলিশের ভূমিকাকে সেবা হিসেবে গ্রহণ করে বলেন, মানুষকে এ মহামারী থেকে রক্ষা করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে কোভিডের ভয়াবহতা বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সে কারণে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে সচেতন করা জন্য। বিতরণ করা হয়েছে লক্ষাধিক মাস্ক। বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে খাদ্য ও আর্থিক সাহায্য।
তিনি আরও বলেন, এতে কিছুর পরও কিছু মানুষ বিধি ভঙ্গ করে রাস্তায় চলে আসছে। যা চেক পোস্টের মধ্যেমে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এ বিধি লঙ্ঘন করলে সরাসরি সাজা দেওয়ার সুয়োগ নেই। তাই অনেক ক্ষেত্রে মোটরযান আইন বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যেমে কিছু সাজা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ বিধি লঙ্ঘন করায় ইতোমধ্যে কয়েক হাজার যানবহন আটক করে মোটরযান আইনে মামলা করা হয়েছে। কখনও আবার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এসব পুলিশ সদস্যদের ইতোমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। একই সাথে কয়েক দফায় সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। এ সময় তিনি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বৈশ্বিক মহামারী মোকাবেলায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

 

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।