দু’টিতে সাজাপ্রাপ্ত ও ৭ মামলায় পলাতক সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য দেলোয়ার গ্রেপ্তার

আশাশুনি: আশাশুনি থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য জিআর ১৮৩/১৭ ও ৬২১/১৭ নং মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও ৭ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার রাতে আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম কবিরের নেতৃত্বে এসআই নাজিম উদ্দিন ও এসআই পূর্ণেন্দু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযানে রাজবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ার পর থেকে এলাকার চাপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ, কচুয়া জামে মসজিদ নতুন করে নির্মাণ, বাউশুলি মাদ্রায় মহাশ্মশান নির্মাণ সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দিরে জেলা পরিষদ থেকে অনুদান দেয়ার নাম করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শুধু তাই নয় তিনি চাকরি বাণিজ্য, ডলার ব্যবসা, হুন্ডি ব্যবসার মত অপরাধের সাথে জড়িত।

তার বিরুদ্ধে এলাকার বিভিন্ন লোকের চাকরি দেয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে। দেলোয়ার হোসেন জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে অনেকে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।

এলাকার লোকের বক্তব্যে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন সব সময় সরকারি দলের লোক। তিনি বিএনপি’র শাসনামলে ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলের সময় তিনি অনেক টাকার বিনিময়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছিলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকে তাকে হাইব্রিড আওয়ামী লীগ বলে অভিহিত করেছেন।

জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ার পূর্বে তিনি এলাকায় ডলার ব্যবসা ও হুন্ডির ব্যবসা করতেন। তারপর হঠাৎ করে এলাকাছাড়া হয়ে যায় এবং বেনাপোল ও ভোমরা বন্দরে কালোবাজার এর মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় লিপ্ত হয়ে কয়েক বছরের মধ্যে কোটি টাকার মালিক হয়। এরপর দেলোয়ার এলাকায় এসে চেয়ারম্যান নির্বাচন করে সেখানে পরাজিত হওয়ার পরে আবারও এলাকা ছেড়ে পূর্বের ব্যবসায় চলে যায় এবং পরবর্তীতে এলাকায় ফিরে এসে কোটি টাকার বিনিময়ে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে জেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন সরকারি অনুদান দেয়ার নাম করে অসংখ্য স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, ক্লাবের ভবন নির্মাণ ও সংস্কারে জেলা পরিষদের অনুদান দেয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। শুধু তাই নয় তিনি চাকরি দেওয়ার নাম করে অনেক অসহায় পরিবারকে পথে বসিয়েছে।

তারা তাদের শেষ সম্বল টুকু বিক্রি করে দিয়েছিল শুধু সন্তানের চাকরি হবে বলে। কিন্তু তিনি চাকরি তো দেন নাই বরং তাদের টাকাও ফেরত দেয় নাই। তার দেয়া অঙ্গীকারনামা অনেক স্ট্যাম্প ও চেক রয়েছে এলাকার আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী মানুষের কাছে।

আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম কবির জানান যেহেতু তিনি সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি এ ধরনের আসামিদের খুঁজে বের করে ধরে আনার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তাই আমি সেটা করেছি।

বহুদিন ধরে তাকে ধরার চেষ্টা করেছিলাম অবশেষে গতকাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই নাজিম উদ্দিন ও এএসআই পূর্ণেন্দু রাজবাড়ি জেলার এক বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।