বাঙালি সভ্যতা সংস্কৃতি ও জাতিসত্তার বিবর্তন ধারা -বিলাল মাহিনী

বাঙালি জাতির বিশেষতঃ পূর্ব বাংলার গণমানুষের মিলিত সংগ্রামের ফসল আজকের বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস, সভ্যতা-সংস্কৃতি ও আলাদা জাতিসত্তা। আমরা এই নিবন্ধে বাঙালি বলতে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ (পূর্ব বঙ্গ), ভারতের পশ্চিম বঙ্গ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জনপদে ছড়িয়ে থাকা প্রত্যেক বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে বুঝিয়েছি। বিশ্ব মানচিত্রে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ ভূখ- জুড়ে বাঙালির দেখা মেলে। বাঙালির নিজস্ব স্বকীয়তা, স্বাধীনতা, সভ্যতা-সংস্কৃতি ও আলাদা জাতিসত্তা থাকা সত্ত্বেও আমরা আজ ভিনদেশী সভ্যতা-সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচারের প্রতি অধিক হারে ঝুকে পড়ছি। এতে একদিকে আমরা হারাচ্ছি আমাদের ঐতিহ্য, শিক্ষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি। অন্যদিকে আমাদের মৌলিক পরিচয় বাঙালিত্ব তথা জাতিসত্তা থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছি। একসময় আমাদের এ ভূখ-ে (ভারত-বাংলাদেশ) আমাদের বাঙালিদের শৌয-বীর্য, আধিপত্য ছিল গোটা উপমহাদেশ জুড়ে। কিন্তু কালের বিবর্তনে নিজেদের মধ্যে বিভেদ হিংসা-বিদ্বেষের ফলে আজ আমরা বাঙালি জাতিকে বহুভাগে ভাগ করে ফেলেছি। বঙ্গভঙ্গ রদের মধ্যদিয়ে বাঙালি অধ্যুষিত ভূখ-কেও দু’ভাগ করে ছেড়েছি। যার পরিণতিতে আমাদের সংস্কৃতি ভাষা কৃষ্টি ও জীবনাচরণে এসেছে ভিন্নতা।

আর এখন বিজাতীয় কালচার, মডেল ও মর্ডাণ ফ্যাসানের অনুকরণ অনুশীলনের ফলে আমাদের বাঙালিত্ব হারাতে বসেছে। এভাবে চলতে থাকলে এবং অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ও জীবন-যাপন অধুনিকায়ন হলে এক সময় আর গ্রাম খুঁজে পাওয়া যাবে না। শহরের আদলে গ্রামগুলো গড়ে উঠলে এবং চলমান পাশ্চাত্য ও আকাশ সংস্কৃতির প্রযুক্তি জালে নিজেদেরকে জড়ালে অদূর ভবিষ্যতে বাঙালির দেখা পাওয়া হবে ভার। একটা সময় বাঙালিরা (হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খৃস্টান-ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ অন্যান্যরা) সকলে একসাথে মিলেমিশে একই ভাষা সভ্যতা সংস্কৃতি ও জাতিসত্তা নিয়ে বেঁচে ছিলো। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি হারানোর পথে।

বাঙালি জাতি গঠনের ইতিহাস :

বাঙালির ইতিহাসকে লিখিতরূপে সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায় অষ্টম শতক থেকে। এর পূর্বের ইতিহাস আছে, কিন্তু তা সুস্পষ্ট নয়, শ্রুতি ইতিহাস। তখন সুস্পষ্টভাবে এবং বিশেষ ধারাক্রম অনুসারে এ অঞ্চলের কর্মকা- প্রবাহিত হয়নি। তখন গোত্রীয় সমাজ ব্যবস্থা ও ভিনদেশী বনিকদের ব্যবসায়-বাণিজ্যের কিছু ইতিহাস জানা যায়। ছিলো আর্যরা। অষ্টম শতক থেকে পাল রাজত্বের আরম্ভ। তারা এ অঞ্চলের অধিবাসী ছিলেন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজ্য শাসন করতেন। তাদের আমলে সুস্পষ্ট এবং শৃঙ্খলিত কোন নগর-জীবন গড়ে না উঠলেও সে সময়কার সভ্যতা-সংস্কৃতি জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে ছিলো। নৃত্য, গীত, পুথি কবিতা এবং লোকরঞ্জনের বহুবিধ উপকরণ সকল মানুষের আচরণবিধি এবং জীবন যাপনের মধ্যে ছড়িয়ে ছিলো। পালরা বৌদ্ধ ছিল, তারা মানুষে মানুষে বিভাজন মানত না। তখন এমন অবস্থা ছিলো যে, কর্মের দায়ভাগে এবং অধিকারে একজন শূদ্রও ব্রাহ্মণ হতে পারত, আবার ব্রাহ্মণও ইচ্ছা করলে শূদ্র হতে পারত। শূদ্র হওয়াটা তখন ঘৃণার বা অপরাধের ছিল না। বাংলা ভাষার প্রথম কবি সরহপা ব্রাহ্মণের পুত্র ছিলেন। তিনি নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন যে, মানুষের পরিচয় হচ্ছে তার বুদ্ধিতে, বিবেকে, অনুভূতিতে এবং মননে, তার পরিচয় জাতিগত বিচারে নয়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, দ্বাদশ শতকে কর্ণাটক থেকে বহিরাগত সেনরা এসে যখন এদেশকে অধিকার করল, তখন তারা একটি নিষ্ঠুর শোষন-কার্যের মধ্য দিয়ে এদেশবাসীকে নির্যাতন করতে লাগলো। তারা সংস্কৃতিকে নিয়ে এলো রাজসভার মধ্যে এবং মন্দিরের অভ্যন্তরে। পাল আমলে বাংলা ভাষা ক্রমশ রূপলাভ করছিল। সরহপা পুরবী অপভ্রংশে তাঁর দোঁহাকোষ রচনা করেছিলেন। সেনরা এসে সংস্কৃতিকে প্রশাসনিক ভাষা হিসাবে গ্রহন করেন এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভাষা হিসেবেও সংস্কৃতকে গ্রহণ করেন। যার ফলে এদেশের মানুষের নিজস্ব উচ্চারণের ভাসা সরকারি আনুকূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। আমরা লক্ষ্য করি যে, সেনদের আমলে দেশীয় ভাষায় চর্চা সম্পূণরূপে বন্ধ ছিলো।
১২০৫ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দীন বখতিয়ার খিলজীর আগমনে এদেশের সাধারণ মানুষ নতুন করে চেতনা পেলো। সুকুমার সেন তাঁর একটি রচনায় স্বীকার করেছেন যে, তাৎকালীন প্রায় সকল শ্রেণীর জনগণ বখতিয়ারের আগমনকে স্বাগত জানিয়েছিলো, এমনকি কিছু সংখ্যক ব্রাহ্মণও বৃদ্ধ রাজা লক্ষণ সেনকে বিভ্রান্ত করে দেশত্যাগ করতে সহায়তা করেছিল। মানুষে মানুষে বিভাজন মুসলমান আমলে আর রইলো না, পাল আমলেও এটা ছিল না। মুসলমানরা একটি নতুন বিশ্বাসকে আনলেন, এদেশের সংস্কৃতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করলেন এবং একটি বিস্ময়কর মানবিক চৈতন্যের উদ্বোধন ঘটালেন।
আমাদের জাতিসত্তার উন্মেষ এবং বিকাশকে আলোচনা করতে গেলে পাল আমলের বিস্তৃত পরীক্ষা করা প্রয়োজন এং সেনরা যে অসৌজন্যের জন্ম দিয়েছিল, তারও সুস্পষ্ট পরিচিতি উপস্থিত করা প্রয়োজন। অবশেষে মুসলমান আমলে এ অঞ্চলের সংস্কৃতি যে নতুন মানবিক রূপ পরিগ্রহ করল তারও বিস্তৃত সমীক্ষার প্রয়োজন। এ নিয়ে অল্পস্বল্প লিখিত হলেও বিস্তৃতভাবে এ নিয়ে কেউ গবেষণা করেননি। তবে সম্প্রতি মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এ নিয়ে গবেষণা করছেন এবং তাঁহার ‘মুক্তি সংগ্রামের মূলধারা’ গ্রন্থটি এ ক্ষেত্রে পথিকৃৎ বলা যেতে পারে। তাঁর লিখিত ‘আমাদের জাতিসত্তার বিকাশধারা’ আমাদের সংস্কৃতির পরিচয়কে নতুন করে উদঘাটন করেছে।

বাঙালির ক্রমধারা :

বাঙালিরা দক্ষিণ এশিয়ার স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অধিবাসী। রাষ্ট্র কখনো সাগরের বুকে একটি দ্বীপের মতো হঠাৎ জেগে ওঠে না। রাষ্ট্রের ভৌগলিক সীমারেখারও একটি পুরাতত্ত্ব থাকে, তার একটি অতীত থাকে। বর্তমান জনগোষ্ঠীর সংগ্রাম হলো পূর্বপুরুষদের সংগ্রামেরই ধারাবাহিকাতা। সেই সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত ভিত্তিভূমিতে প্রোথিত হয় বর্তমান স্বাধীনতার শিকড়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রসত্তা ও জাতিসত্তার উদ্বোধন ও বিকাশ ঘটেছে এ পাললিক জনপদের মানুষদের নিরন্তর সংগ্রাম ও অব্যাহত সাধনার মাধ্যমে। এই সংগ্রামের রয়েছে এক বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা ও অসামান্য বহমানতা। সুপ্রাচীন সভ্যতার গৌরব-পতাকা হাতে এই ভাটি অঞ্চলের সাহসী ও পরিশ্রমী মানুষেরা শতাব্দীর পর শতাব্দী লড়াই করেছেন আর্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। তাদের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ সংগ্রাম ও মুক্তির লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যুগ যুগ ধরে এই জনপদ বিবেচিত হয়েছে উপমহাদেশের বিশাল মানচিত্রে আর্যপূর্ব সুসভ্য মানবগোষ্ঠীর নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থলরূপে। এ এলাকায় জনগণের অস্তিত্ব ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়েছে বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতা। নিকট-অতীতে এ লড়াই তীব্র হয়েছে ইংরেজ ও তাদের এদেশীয় কোলাবোরেটর বর্ণহিন্দুদের সাথে। আর্যরা তাদের অধিকার বিস্তৃত করে নানা ঘোরপথে যখন এ বদ্বীপে উপনীত হলো, তখন থেকে একেবারে হাল আমলের বাংলাদেশের জনগণের আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই পর্যন্ত এ জাতির সংগ্রাম ও সংক্ষোভের মূলধারা রচিত হয়েছে অভিন্ন প্রেরণার এক অচ্ছেদ্য বন্ধনে।
এ অঞ্চলের মানুষের বংশধারায় বহু-বিচিত্র রক্ত প্রবাহের মিশেল ঘটেছে। অধিকিন্তু এ দেশীয় সভ্যতা ও এক সময় বাঙালি সংস্কৃতি এবং জাতিসত্তা তাদের স্বতন্ত্র একটি জাতিতে পরিণত করে। বহু জাতির সংমিশ্রণের মধ্যে রয়েছে- সেমিটিক দ্রাবিড় রক্তের সাথে এসে মিশেছে অষ্ট্রালয়েড, মঙ্গোলীয়, এমনকি আর্য-রক্তের ধারা। এ প্রবাহ এমনভাবে মিশে গেছে যে, নৃতাত্ত্বিক বিবেচনায় কাউকে এখন আর স্বতন্ত্রভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। চেহারার বৈচিত্র্য সত্ত্বেও এলাকার গরিষ্ঠ মানুষের মিল রয়েছে তাদের জীবনদৃষ্টিতে। জীবনদৃষ্টির অভিন্নতাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠেছে তাদের জীবনের অভিন্ন লক্ষ্য এবং একত্রে বসবাসের ও জীবনধারণের স্বতঃস্ফূর্ত বাসনা ও প্রতিজ্ঞা। অভিন্ন বোধ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে জন্ম হয়েছে তাদের একটি জীবনচেতনা ও আচরণরীতি। তাদের আকাক্সক্ষায় ও তাদের সংগ্রামে এই জীবনচেতনারই স্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে বাঙালি জনজীবনে।

মুসলিম আগমন ও তৎপরবর্তী সভ্যতা :

মুসলিমরা এসে এদেশের সামাজিক অচলায়তন গুঁড়িয়ে দিলো এবং নৃতত্ত্বের তথাকথিত প্রাচীরও অপসৃত করলো। ফলে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টিকারী বংশ ও বর্ণচেতনার অবসান ঘটলো। গোড়াপত্তন হলো জীবনদৃষ্টি, বিশ্বাস ও আদর্শের ঐক্যের ভিত্তিতে এক নতুন জনগোষ্ঠীর। জেগে উঠলো এক নতুন জাতিসত্তা । ইসলাম এসে এখানে সামাজিক আদান-প্রদানের ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করেছে এবং বংশ ও রক্তভিত্তিক গোষ্ঠী-ধারণাকে সমূলে উচ্ছেদ করে বিশ্বাসের ঐক্যকে সামাজিক ঐক্যে রূপান্তরিত করেছে। এই প্রক্রিয়ায়ই বর্ণাশ্রমের এই দেশ-আদিবাসী ও বৌদ্ধদের এই দেশ- মাত্র কয়েকশ’ বছরে একটি নতুন জাতির দেশরূপে গড়ে উঠলো। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর ভিত্তিমূলে রয়েছে এদেশে ইসলামের অভ্যূদয়কালে যারা বাস করতেন, তাদের সাথে বণিক শ্রেণির মুসলামনদের রক্তের অবাধ মিশ্রণ। স্থানীয় অধিবাসীরা দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করলেন। মুসলমানদের সংখ্যা এদেশে দ্রুত বেড় গেলো। ফলে সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রেরণায় উজ্জীবিত একটি নতুন জাতির অভ্যূদয় ঘটলো ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বাংলা সা¤্রাজ্যে। যারা ইসলাম গ্রহণ করলো না, তারাও তাদের অনড় বর্ণাবাদ ও জাতিবৈষম্য নিয়ে মুসলমানদের পাশাপাশি বাস করতে থাকলো পৃথক ও স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নিয়ে। ইসলাম তাদের গ্রাস করল না, তাদের জন্যও বিশ্বাসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করল।

বাঙালি জাতিসত্তায় বিভাজন যেভাবে :

উনিশ শ’ এগারো সালে বঙ্গভঙ্গ রদের মধ্য দিয়ে বাঙালি জনগোষ্ঠীকে দু’ভাগে ভাগ করা হলো। বৃটিশ শাসনাবসানের পর উনিশ শ’ সাতচল্লিশ সালের ভারত বিভাগের সময় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বেঙ্গল প্রদেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে হিন্দু মহামভা ও কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে নতুন করে বঙ্গভঙ্গের দাবি ওঠে। অন্যদিকে বাংলাদেশকে অখ- রাখা জন্য চেষ্টা চালায় মুসলমানরা। অখ- বাংলাদেশকে পাকিস্তানিদের অংশ বানানো যাবে না- বিবেচনা করে বাংলার মুসলমান নেতৃবৃন্দ স্বতন্ত্র স্বাধীন অখ- বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। মুসলিম লীগ হাই কমান্ড তাতে সম্মত হলেও গান্ধী-নেহেরু-প্যাটেলের কংগ্রেস তার বিরোধিতা করে এবং বঙ্গভঙ্গের পক্ষে অনমনীয় রায় দেয়। যার ফলে বাঙালিরা আবারো ভিনভাষী এক জাতির (পাকিস্তানিদের) সাথে মিলেমিশে পাকিস্তান নামে একটি দেশ গঠন করে।
সবশেষে ১৯৭১ সালে পূর্ববাংলার বাঙালি মুসলমানদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আসাম, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা নিজেদের ঘর-বাড়িতে তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন, এ সংগ্রামের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। তাদের ধারণা ছিল, পূর্ববাংলার জনগণের মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটবে তার ফলে দুই জাতিতত্ত্বের মৃত্যু হবে। এটি তারা শুধু মনেই করেননি, প্রচারও করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের বাঙালি হিন্দুরা এ আন্দোলনকে সমর্থন দিলেন। ভারতের সহযোগিতায় গঠিত হলো মিত্র বাহিনী। পাকিস্তানী বর্বর হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের মধ্যদিয়ে লাল-সবুজের পতাকা শোভিত নতুন ভূখ-ের জন্ম হলো। যেটি আমার বাংলাদেশ।

বাঙালিরা এখন দুটি আলাদা দেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন জনভূমিতে বাস করলেও তারা একটি স্বতন্ত্র জাতি। তাদের রয়েছে আলাদা সভ্যতা সংস্কৃতি ও জাতিসত্তা। তাই বিভেদ ভুলে বাঙালি জাতির কৃষ্টি-কালচার ও নিজস্ব সংস্কৃতির লালন করা একান্ত জরুরি।

বিলাল মাহিনী / পরীক্ষক : ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। প্রভাষক : গাজীপুর রউফিয়া কামিল মাদরাসা, প্রতিষ্ঠাতা ও  নির্বাহী সম্পাদক : সিংগাড়ী আঞ্চলিক গণগ্রন্থাগার ও ভৈরব সংস্কৃতি কেন্দ্র, অভয়নগর, যশোর। জীবন সদস্য- নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউট।

Check Also

সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে দশ লাখ টাকার মালামাল আটক

সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্তে চোরাচালান বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদকদ্রব্যসহ প্রায় দশ লক্ষ টাকার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।