বিলাল মাহিনী (অভয়নগর)যশোর প্রতিনিধি :
যশোরের দুঃখ খ্যাত ভবদহ অঞ্চল এক সময় কৃষিতে বিখ্যাত ছিলো। ধান, পাট এর পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি উৎপাদন হতো এ অঞ্চলে।
কিন্তু সমায়ের ব্যবধানে ভবদহের করাল গ্রাসে সে সকল সোনালী অতীত এখন গল্প মাত্র। চারিদিকে অথৈই পানি আর ঘের।
তবুও কিছু কৃষক শত প্রতিকুলতা পাড়ি দিয়েও তাদের সোনালী অতীত ধরে রাখতে প্রাণ পোন চেষ্টা চালিয়ে জাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কৃষক পাট চাষ করে থাকে। প্রতিকূলতা থাকলেও ফলিয়েছে সোনালী পাট। আর এ পাট সংগ্রহ করে ঘরে তোলার এখনী উপযুক্ত সময়। তাই ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষক। তাদের প্রত্যাশা ন্যায্য মূল্য। কেননা মধ্যস্থতাভোগীদের অতি মুনাফামুখীতায় কৃষক বঞ্চিত হয় সঠিক দাম থেকে।
যশোরের অভয়নগর উপজেলাধীন ভৈরব উত্তর-পূর্ব জনপদের পাট চাষীদের সোনালী স্বপ্নের যাত্রা শুরু হয়েছে শ্রাবণের শেষভাগে।
পাট চাষীরা এখন ব্যস্ত সোনালী আঁশ সংগ্রহ। তারা চান ন্যায্য দাম।
এ বছর পাট চাষীদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ফোয়ারা। চারিদিকে পাট পঁচা গন্ধে মেতে উঠেছে কৃষি-পল্লী। শ্রাবণে কাটা পাট পঁচেছে প্রায় একমাস ধরে।
এখন চলছে পাট বাছাইয়ের কাজ, চলবে ভাদ্রের শেষ পর্যন্ত। ফলনও ফলেছে বেশ, উপযুক্ত দাম পেলে লাভবান হবে চাষী এমন স্বপ্নই দেখছে তারা।
অভয়নগর উপজেলাধীন বাঘুটিয়া ইউনিয়নের জয়খোলা গ্রামের পাট চাষী বলরাম মল্লিক বলেন, এবার পাটের ফলন বিগত কয়েক বছরের চেয়ে ভাল। যদি উপযুক্ত দাম পাই তাহলে লাভবান হতে পারবো।
বিভিন্ন পদ্ধতিতে চলছে পাট বাছাইয়ের কাজ। পুরুষ-মহিলা সবাই একসাথে করছেন এই পাট বাছাইয়ের কাজ।পানিতে নেমে বাছাই করছে পুরুষের দল আর ডাঙায় মহিলাদের দল। কেউ টাকায়, কেউ আবার পাটকাঠির বিনিময়ে করছেন এই কাজ। বেকারত্ব কমেছে কিছুটা, এই কাজে যারা পারদর্শী তাদের উপযুক্ত মূল্য দিয়েই নিতে হচ্ছে এই কাজে।
অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পাথালিয়া গ্রামের পাট চাষী বেলায়েত হোসেন বলেন, তার পাটের আঁশ এবার অন্য বছরের তুলনায় বেশ মোটা এবং বিগত বছরগুলো অপেক্ষা এবার ফলন ভালো। আবহাওয়া পক্ষে থাকলে গুণগত মানে কোনো প্রকার ঘাটতি হবে না। উপযুক্ত দাম পেলে লাভবান হতে পারবো।
সোনালী আঁশের সোনালী স্বপ্ন পূরণ হবে যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে। ঠিকমত রোদ পেলে শুকিয়ে নিতে পারবে পাট। স্বপ্ন পূরণ হবে পাট-চাষীদের।