শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোর-খুলনা মহাসড়ক, যেন এক মরন ফাঁদ!

মোঃ রাসেল হোসেন, যশোর সদর প্রতিনিধিঃ

প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন এক মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে যশোরের সদর উপজেলার পদ্মবিলা নামক স্থান থেকে শুরু করে অভয়নগর উপজেলার শেষ অংশ পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন স্থান ফুলে গিয়ে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ব্যস্ততম এই সড়কে চলাচলরত আন্তঃজেলা ও দুরপাল্লার যানবাহনসহ পণ্যবাহী মোটরগাড়ী চলাচলের ক্ষেত্রে খুবই বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে প্রাণ ও অঙ্গহানীর পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সম্পদ।

যশোর জেলার সদর উপজেলাধীন পদ্মবিলা নামক স্থান থেকে শুরু করে যশোর-খুলনা’র সীমান্তবর্তী অভয়নগর অংশ পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ করে খ্যাতনামা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন লিঃ। অপরদিকে পদ্মবিলা থেকে যশোরের পালবাড়ী মোড় পর্যন্ত আরও ১৯ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ করে মাহবুব এন্ড ব্রাদার্স নামীয় অন্য একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তমা কনস্ট্রাকশন লিঃ এর অংশের রাস্তার কাজ শেষ হতে না হতেই যানবাহনের চাপে প্রায় সমস্ত রাস্তা দেবে যায়। ফলে গোটা রাস্তা জুড়ে সৃষ্টি হয় খানা-খন্দ। ঘটতে থাকে একের পর এক দুর্ঘটনা। যানবাহন চলাচল সচল রাখতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুলে ফেঁপে থাকা অংশগুলো কেটে পাথর ও বিটুমিন দিয়ে করা হয় রিপেয়ারিং। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশ আবারও ফুলে উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্যে প্রকাশ, যশোরের পালবাড়ী মোড় থেকে অভয়নগর উপজেলার শেষ সীমানা পর্যন্ত মহাসড়কটি নির্মাণ কাজে সরকারের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে সর্বোচ্চ ৩০ টন ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১২০০ যানবাহন চলাচলের কথা। কিন্তু সড়কটি অত্যন্ত ব্যস্ততম হওয়ার কারণে এবং ধারণক্ষমতার চেয়েও অনেক বেশি পণ্য বোঝায় করে মোটর গাড়ী চলাচলের কারণে সড়কটির এই অবস্থা হয়েছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। অর্থাৎ সড়কটির বেহাল অবস্থার জন্য আইনের তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত পণ্য বোঝায় করা ট্রাক বা কভার্ড ভ্যানগুলিকেই দায়ী করা হয়েছে। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্যের পাশাপাশি বিটুমিনের গ্রেড নিয়েও সচেতন মহলের প্রশ্ন রয়েছে এবং প্রদত্ত কাজ ঠিকমতো তদারকি না হওয়ার কারনেই এমনটি হয়েছে বলে সচেতন মহল মনে করেন। অতিদ্রæত এই সড়কটি পুনঃমেরামত করা না হলে রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বর্তমান অবস্থায় সড়কে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে দুর্ঘটনা। নিভে যাচ্ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকেই। এ ব্যাপারে অতিদ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ দাবী করেন সচেতন মহল।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।