তালেবানের সংবাদ সম্মেলনে এক সাহসী নারী সাংবাদিক

কাবুল বিজয়ের পর সোমবার তালেবানদের প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। সেখানে উপস্থিত কাবলি পরা তালেবানের নেতারা। উপস্থিত সাংবাদিক। তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, এদিন ওই সংবাদ সম্মেলনস্থলে একমাত্র নারী সাংবাদিক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউজিল্যান্ডের চার্লটি বেলিস। তিনি এদিন প্রচ- সাহসিকতা প্রদর্শন করেছেন।

তালেবান নেতাদের সামনে বুলেটের মতো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। জানতে চেয়েছেন আফগান নারীদের প্রতি সম্মান জানাবে কিনা তালেবানরা। নারীদের কাজে যেতে দেয়ার অনুমতি দেয়া হবে কিনা।

জানতে চেয়েছেন মেয়েরা স্কুলে যেতে পারবে কিনা।

আদতে এসব প্রশ্ন যেন লাখো আফগান নারীর মুখের ভাষা হয়ে বেরিয়ে আসছিল তার মুখ দিয়ে।

চার্লটি বেলিস কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরায় কাজ করেন ২০১৯ সাল থেকে। তাকে নিয়ে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল লিখেছে, তিনি সশস্ত্র তালেবানদের সামনে দাঁড়িয়ে জোরালো প্রশ্ন তুলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রথম সাংবাদিক হিসেবে তিনিই তালেবানদের প্রশ্ন করার সুযোগ পান। এ সময় তার মুখ ঢাকা ছিল। তবে তার ফাঁক গলিয়ে উঁকি দিচ্ছিল স্বর্ণকেশ।

তালেবানের এই সংবাদ সম্মেলন কভার করার জন্য অন্য প্রথম নারী সাংবাদিক হিসেবে তিনিই এই সুযোগ পেলেন এবং সেই সুযোগকে হেলায় নষ্ট করেননি। তিনি যখন প্রশ্ন করেন তখন এক উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। যে ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যায় শান্ত হয়ে আছেন চার্লটি বেলিস।

আফগানিস্তানের নতুন এসব শাসকদের সামনে তিনি নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন একই সঙ্গে কঠিন প্রশ্ন ছুড়ে মারছিলেন।

তালেবানদের কাছে তিনি জানতে চান, নারী ও কন্যাশিশুদের অধিকার নিয়ে জানতে চাই আমি। জানতে চাই নারীদেরকে কাজে যোগ দিতে দেয়া হবে কিনা। মেয়েরা স্কুলে যেতে পারবে কিনা। নারী ও কন্যাশিশুদের আপনারা কি নিশ্চয়তা দিতে পারেন যে, তাদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে? তার এ প্রশ্নের জবাব দেন তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। তিনি সাংবাদিকদের নিশ্চয়তা দেন যে, আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার দেয়া হবে। শরীয়া আইন যতটা অধিকার দিয়েছে, ততটাই দেয়া হবে। নারীরা সব রকম অধিকার পাবেন। ইসলামের সীমাবদ্ধতার মধ্যে তাদেরকে সব অধিকারের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে চাই।

তালেবানরা আফগানিস্তান তাদের দখলে নেয়ার পর লাখ লাখ আফগান নারীর যে ভাবনা, যে হতাশা তার বেরিয়ে এসেছে চার্লটি বেলিসের মুখ দিয়ে। সোমবার তালেবানদের কাবুল বিজয় সম্পর্কে সাংবাদিক চার্লটি বেলিস এএম রেডিওকে বলেছেন, তালেবানরা সোমবার যেভাবে রাজধানী দখল করে নিয়েছে, তা দেখে মনে হয়েছে বন্ধুকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেছেন, তার কয়েকজন বন্ধু বন্দুক কিনেছিলেন। কিন্তু তালেবানরা যখন কোনো রক্তপাত ঘটাচ্ছে না- এমন খবর শুনতে পায় তারা, সঙ্গে সঙ্গে তাদের অনেকে পালিয়ে যাওয়া শুরু করে।

Check Also

ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি

পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।