করোনাকালীন জেলার সকল পর্যায়ের দরিদ্র, দুঃস্থ, দুর্দশাগ্রস্ত ও কর্মহীন সংবাদকর্মীদের আর্থিক সংকট নিরসনকল্পে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান পাওয়ার দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল ১১ টায় সাতক্ষীরা নিউ মার্কেট মোড়স্থ স. ম. আলাউদ্দিন চত্ত্বরে সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মো. মুনসুর রহমান এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার সংবাদের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি কাজী নাসির উদ্দিন, সাতক্ষীরা অনলাইন প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আশিক সরদার, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. বায়েজীদ হাসানসহ স্থানীয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সংবাদকর্মীবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে মো. মুনসুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরা থেকে নিয়মিত ৯টি দৈনিক ও ৩টি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে আসছে। ওই প্রকাশিত প্রত্যেকটি পত্রিকার নির্দিষ্ট সংখ্যক সংবাদকর্মীদের একটি তালিকা প্রস্তুতের জন্য ২০১৭ সালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জেলা তথ্য অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছিল। নির্দেশনা মোতাবেক জেলা তথ্য অফিসার প্রত্যেক পত্রিকার সম্পাদক বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
ওই চিঠির প্রেক্ষিতে দৈনিক দৃষ্টিপাতের সম্পাদক ৬০ জন, দৈনিক যুগের বার্তা পত্রিকার সম্পাদক ৪০ জন, দৈনিক সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক ৩৪ জন, দৈনিক কাফেলা পত্রিকার সম্পাদক ৩৭ জন, দৈনিক দক্ষিণের মশাল পত্রিকার সম্পাদক ৫০ জন, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা পত্রিকার সম্পাদক ৪৫ জন, সাপ্তাহিক মুক্ত সাধীনের সম্পাদক ১৯ জন. দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার সম্পাদক ৪২ জন, দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার সম্পাদক ৬১ জন, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার সম্পাদক ১৩ জন সংবাদকর্মীর তালিকা পাঠিয়েছিলেন।
এছাড়াও পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি স্থানীয় দৈনিক/সাপ্তাহিক পত্রিকার অনুমোদন দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা। তবে ঐ সকল পত্রিকার প্রতিনিধিদের নির্দিষ্ট সংখ্যক তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলা তথ্য অফিসারের নিকট জমা না দেয়ায় তার কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যক সংবাদকর্মীর তালিকা পাওয়া যায়নি বলে জানা য়ায়। এর বাইরেও জেলার প্রায় ১৩৫ এর অধিক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বা অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমের জেলা প্রতিনিধি/সংবাদদাতা রয়েছে। ওই জাতীয় ও আঞ্চলিক এবং স্থানীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, বেতার বা অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমের কিছু সদস্য সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যভুক্তি হতে পেরেছিলেন।
পূর্বে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ৭০ জন সদস্যদের আবেদনপত্রের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মহোদয় তা অনুমোদন দেয়। সম্প্রতি ওই আবেদনকৃত প্রেসক্লাবের ৭০ জন সদস্যদের মধ্যে ৩৫জন এর নাম এই তালিকায় অন্তভুক্ত হয়। সেই তালিকায় অনুমোদন প্রাপ্ত ১ম পর্যায়ের অন্তভুক্ত ৩৫ জন সদস্যের হাতে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের ১০ (দশ হাজার) টাকার চেক বুধবার (১১ আগস্ট) বিতরণ করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয়।
ঐ বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সাতক্ষীরার সকল স্থানীয় পত্রিকার পাশাপাশি বাইরের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘‘সাতক্ষীরার ৩৫ জন সাংবাদিক পেলেন কল্যাণ ট্রাস্ট্রের অনুদান।’’ ঐ অনুদান মূলত শুধুমাত্র সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যরা পেয়েছেন। এই প্রেসক্লাবের বাইরেও সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক পরিষদ, সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ফোরাম, সম্মিলিত সাংবাদিক এসোসিয়েশন সাতক্ষীরা, সাতক্ষীরা অনলাইন প্রেসক্লাব, সাতক্ষীরা রিপোর্টার্স ক্লাব, সাতক্ষীরা নিউজ ক্লাব, জেলা সাংবাদিক এসোসিয়েশন সাতক্ষীরা, টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন সাতক্ষীরা, কদমতলা আঞ্চলিক প্রেসক্লাবসহ প্রত্যেকটি উপজেলা প্রেসক্লাব এর শত শত সদস্য। সেই ক্লাবের সদস্যরাও এই অনুদানের অর্থ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কয়েকমাস পূর্বে করোনা সংক্রমণের এই দুঃসময়ে দেশব্যাপী অসহায়, দুঃস্থ এবং কর্মহীন সাংবাদিকদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। অনুদানের টাকা সুষ্ঠভাবে বন্টন করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করেন পিআইবি এর চেয়ারম্যান।
ওই চিঠিতে প্রেসক্লাব সভাপতি ও সম্পাদকের মাধ্যমে একটি আবেদনপত্র গ্রহণ করার কথা উল্লেখ ছিল। তবে প্রেসক্লাব সদস্য ব্যতীত ওই আবেদনপত্র কোনো সংবাদকর্মী করতে পারবে না তার কোনো নির্দেশনা ছিল না। অথচ ওই অনুদানের টাকা পেতে আবেদন করার জন্য সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সদস্যদের মাঝে মঙ্গলবার (৪ মে) হিড়িক পড়েছিল। ওই পুরুণকৃত ফরম সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি ও সম্পাদক শুধুমাত্র তার সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে গ্রহণ করেন।
অতঃপর ওই সময়ে ৭০ জনের আবেদনপত্র জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করেন। তখন প্রেসক্লাব সদস্য ব্যতীত বাইরের কোনো সংবাদকর্মীর আবেদনপত্র গ্রহণ করেনি প্রেসক্লাব সভাপতি ও সম্পাদক। ইতিপূর্বে সাতক্ষীরার সংবাদকর্মীরা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বার বার তাগিদ দিলেও সিনিয়র কিছু সাংবাদিকদের স্বেচ্ছাচারিতার জন্য তা আলোর মুখ দেখেনি এবং জেলার সংবাদকর্মীদের জন্য সরকারি কোনো অনুদান এলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যরা সেই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন।
ঐ প্রেসক্লাবের সদস্যদের বাইরে শত শত সংবাদকর্মী থাকলেও বরাবরই তারা সরকারি অনুদান বঞ্চিত থেকে যায়। যা একটি অযৌক্তিক, অমানবিক ও ন্যায়নীতি বিবর্জিত ঘটনার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আজকের সংবাদ সম্মেলন এর স্থল থেকে। অপরদিকে, করোনার ১ম ও ২য় ঢেউ চলাকালীন সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে জেলার প্রায় ৩০ জনের অধিক সংবাদকর্মী সংক্রমণের আক্রান্ত হন।
এছাড়াও সংক্রমণের শিকার হয়ে প্রায় ২ জনের অধিক সংবাদকর্মী মারা যান বলে জানা যায়। তবে ঐ সংক্রমণে আক্রান্ত সংবাদকর্মীদের মধ্যে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আর্থিক অনুদান এককালীন ২ লক্ষ টাকা পেয়েছেন এনটিভি এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সুভাষ চৌধুরী। এছাড়াও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে মঙ্গলবার (৪ মে) ২০০ জন সাংবাদিক (মৃত্যুবরণকারীসহ) ও তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে সরকার।
ওই তালিকাভুক্ত হওয়ায় সাতক্ষীরার বাসসের প্রতিনিধি অরুণ ব্যানার্জীকে এককালীন এক লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। এরপূর্বে সংক্রমণের ১ম ঢেউয়ের সময়কালে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত, দুর্দশাগ্রস্ত ও কর্মহীন সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ১০ (দশ হাজার) টাকা করে এককালীন চেক সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ৩৫ জন স্বচ্ছল সদস্যদের মাঝে বন্টন করা হয়।
কিন্তু ওই সময়ে এই তালিকায় প্রেসক্লাবের সদস্য ব্যতীত বাইরের সংগঠনের সদস্যরা অন্তভুক্ত হতে পারেনি। এছাড়াও সংক্রমণের ২য় ঢেউ চলাকালে আবারও যখন দেশের মধ্যে পেশাগত কাজ করতে যেয়ে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত, দুর্দশাগ্রস্ত ও কর্মহীন সাংবাদিকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।
ওই অনুদানের টাকা প্রাপ্তির জন্য পূর্বের বছরের (২০২০) অনুদানপ্রাপ্ত যে সকল সাংবাদিকরা আবেদন করেছিল তাদেরকে নতুনভাবে আবেদনপত্র জমা দিতে নিষেধ করা হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে ২০২০ সালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের প্রথম ঢেউয়ের অনুদানপ্রাপ্ত প্রায় ১০ জনের অধিক সদস্য দ্বিতীয় ঢেউও আবেদন করেন এবং এককালীন ১০ হাজার টাকার চেকও গ্রহণ করেন তারা। এছাড়াও সম্প্রতি অনুদানের টাকা প্রাপ্ত ৩৫ জন সদস্যের মধ্যে বাকি ২০ জনের অধিকাংশই স্বচ্ছল ও নানাবিধ ব্যাবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত প্রেসক্লাবের সদস্যরা ওই অনুদানের অর্থ পেয়েছে বলে আমরা জানি।
তাদের এই টাকা পাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যারা সম্প্রতি এই অনুদানের এককালীন চেক হাতে পেয়েছে তাদের মধ্যেই অধিকাংশ সদস্যের রয়েছে প্রাইভেটকার, একাধিক মটরসাইকেল, ব্যক্তি মালিকানাধীন বহুতল ভবন, ব্যাংকে লাখো লাখো টাকার সঞ্চয় এর পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন কর্ণারে এসি রুমের আলিশান বাড়ির ফ্লাট নিয়ে স্বাচ্ছ্বন্দে বসবাস করছেন। আর বাকি ৩৫ জন্য প্রেসক্লাব সদস্যকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান প্রাপ্তির তালিকা এখনও অপেক্ষমাণ রেখেছে তাদের আর্থিক অবস্থাও উপরিউক্ত ধরণের। সেজন্য আগামীতে ওই প্রেসক্লাব সদস্যদের অনুদান প্রাপ্তির এককালীন নগদ চেক হাতে দেওয়ার পূর্বে তাদের সকলের আর্থিক অবস্থা যাচাই-বাছাই করা আবশ্যক।
মুনসুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেস-২ শাখা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানা যায়-বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান প্রাপ্তির ফরমে যারা আবেদন করবেন তাদেরকে অবশ্যই প্রেসক্লাব সভাপতি ও সম্পাদকের সুপারিশের পাশাপশি অনুদান প্রাপ্তির ফরমের জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকের সুপারিশও বাধ্যতামূলক।
সেজন্য সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ১০৪ জন সদস্যের মধ্যে সম্পাদক বাদে ৯৩ জন সদস্যের ফরমে সভাপতি ও সম্পাদক সুপারিশ করবে বলে জানা গিয়েছিল। তবে আবাদেনপত্র প্রেসক্লাবে জমা দিয়েছিল মাত্র ৭০ জন সদস্য। অথচ ওই ক্লাবের বাইরে শত শত সংবাদকর্মী রয়েছে। ওই সংবাদকর্মীরা কেন আবেদন করতে পারবেন না তার কোনো সদুত্তর প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ সেদিন দিতে পারেনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বছরের বিভিন্ন সময়ে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়মের সচিত্র প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশ করে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে জেলার শত শত সংবাদকর্র্মী। কিন্তু সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের একটি স্বার্থান্বেষী মহলের কতিপয় সদস্যের গ্রুপিংয়ের শিকার হয়ে অদ্যাবধি বহু গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকার সংবাদকর্মী ক্লাবের সদস্য হতে পারেনি। এমন ঘটনা শুধু একজনের ক্ষেত্রে নয় জেলার শত শত সংবাদকর্মীর ক্ষেত্রেও ঘটেছে। যখন কোনো দুর্যোগ বা দুঃসময়ে সরকারিভাবে সংবাদকর্মীদের অনুদান দেওয়া হয় তা অবশ্যই সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য একটি ব্যাতিক্রমী ও নিঃসন্দেহে শুভ উদ্যোগ।
সেই অনুদান প্রাপ্তির ফরমে কেবল মাত্র প্রেসক্লাব সভাপতি ও সম্পাদকের সুপারিশ লাগবে কেন? ওই ক্লাবের সদস্যদের বাইরেও তো অনেক সংবাদকর্মী রয়েছে। যারা স্থানীয় পত্রিকায় ভালো লেখেন। তারাও তো ওই অনুদানের প্রাপ্ত অর্থ পেতে আবেদন করার যোগ্যতা রাখেন। অথচ তাদেরকে সেই প্রাপ্তির পরিবেশ কেন প্রেসক্লাবের সভাপতি বা সম্পাদক তৈরি করে দিচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নহে। আগামীতে সরকার এমন অনুদানের ব্যবস্থা করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন শুধু ওই অনুদানের ফরমে প্রেসক্লাব সভাপতি/সম্পাদকের সুপারিশের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশ রাখারও যেন ব্যবস্থা করে সেই প্রত্যাশা।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অধিকাংশ সদস্যই স্বচ্ছল ও নানাবিধ ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে যুক্ত রয়েছে বলে জানা যায়। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য কিছু সংখ্যক সদস্যের ব্যবসায়িক অবস্থা সাময়িক মন্দা পরিলক্ষিত হয়। এমতাবস্থায় দেশের দুর্দশাগ্রস্ত, কর্মহীন সংবাদকর্মীদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তার জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।
এছাড়াও ওই প্রেসক্লাব সদস্যদের পাশাপাশি বাইরের যে সকল অস্বচ্ছল, দুর্দশাগ্রস্ত ও কর্মহীন সংবাদকর্মী রয়েছে ওই অনুদানের টাকা তারাও পাওয়ার হকদার। তবে সভাপতি/সম্পাদকসহ প্রেসক্লাবের এক শ্রেণির নেতৃবৃন্দ ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার প্রত্যয়ে শুধু স্থানীয় পত্রিকার কর্মী নয় বাইরের গুরুত্বপূণ জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকার কর্মীদেরও ক্লাবের সদস্য করেন না। যা অবিবেচনাপ্রসূত ও মর্যাদাহানিকর ঘটনা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
আসলে জেলার অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের পাশাপাশি উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্যরাও ইতিপূর্বে সরকারি অনুদানের অর্থ পাইনি। ওই অর্থ শুধুমাত্র সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যভুক্ত কিছু (লাখো লাখো টাকা) মালিক/ব্যক্তিবর্গ পেয়ে থাকে। আগামীতে এ ধরণের কোনো অনুদান এলে জেলার সকল পর্যায়ের সাংবাদিকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান প্রাপ্তির ফরমের জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক তা যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে প্রকৃত অসহায়, দুঃস্থ এবং কর্মহীন সাংবাদিকদের তালিকা সুপারিশ আকারে প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাতে অনুরোধ করছি আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে এবং বরাদ্দকৃত ওই অনুদানের অর্থ যেন লাখো লাখো টাকার মালিক/ব্যক্তিবর্গরা না পায়।
এছাড়াও একটি বৃহৎ গণজারণের মাধ্যমে জেলার সংবাদকর্মীদের মিলন কেন্দ্র নামে সুপরিচিত সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের মধ্যে অবস্থানরত একটি কথিত সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ক্লাবের গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের পাশাপাশি সকল অস্বচ্ছল সংবাদকর্মী যাতে আগামীতে সরকারি ওই অনুদানের অর্থ পায় এবং প্রকৃত সংবাদকর্মীরা ক্লাবের সদস্য হিসেবে অন্তভুক্ত হতে পারে তার বিহীত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাননীয় চেয়ারম্যান, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সরকারের সকল সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রেসবিজ্ঞপ্তি