সরকার হটানোর আন্দোলনে ‘জোটবদ্ধ’ হয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার দুপুরে এক আলোচনাসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশে একটা দানবীয় শক্তির উত্থান ঘটেছে। ওরা আমাদের সব কিছু তছনছ করে দিচ্ছে। দেশকে তারা মনুষ্য বসবাসে অযোগ্য করে তুলেছে। আজকে সত্যিকার অর্থেই একটা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র তৈরি করেছে তারা; যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ভবিষ্যত বংশধরকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দিতে চাই তাহলে আমাদের সকলকে জোটবদ্ধ হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের কোনো বিকল্প নেই এখন রাস্তায় নেমে আসা ছাড়া। এটা শুধু রাজনৈতিক দল বিএনপি নয় বা শুধুমাত্র বিরোধী দলগুলো নেমে আসতে হবে- এমন নয়। সবাইকেই নেমে আসতে হবে। আজকে যারা এখানে আছেন সুধীজন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আছেন, সংবাদসেবীরা আছেন প্রত্যেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। কেউ বাদ পড়ছেন না। সুতরাং সবাইকে নেমে আসতে হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে শত নাগরিক জাতীয় কমিটির উদ্যোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য পরলোকগত সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড.খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানের স্মরণে এই আলোচনা সভা হয়।
গত ২০ আগস্ট কোভিডে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন জাহাঙ্গীরনগর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শত নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব কবি আবদুল হাই শিকদার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকালে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের ওপরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের হামলা ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ছেলেরা তাদের একজন সহকর্মীর মুক্তির জন্য শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে গেছে। সেখানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পুলিশ সহকারে তাদের ওপর নির্মমভাবে আঘাত করেছে, অত্যাচার করেছে নির্যাতন করেছে।
তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাহেবের মাজারে ফুল দিতে গেলে আমাদের ঢাকা উত্তর-দক্ষিণের নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ। কোনো উস্কানি ছাড়া, কোনো রকম ঘটনা ছাড়াই সেখানে ভয়াবহ তাণ্ডব সৃষ্টি করল পুলিশ। প্রায় ১৮৭ রাউন্ড গুলি করেছে এবং প্রায় ৪২ জনকে আহত করেছে। আপনরা দেখেছেন যে আমাদের আমান উল্লাহ আমান, আমিনুল হকসহ ৭২ জন নেতা সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
সদ্য পরলোকগত শিক্ষাবিদ খন্দকার মুস্তাফিজুর রহমানের বর্ণাঢ্য শিক্ষা ও কর্মজীবন তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানকে হারিয়ে শুধু পরিবার নয়, আমরা যারা বন্ধু-সহকর্মী-শুভানুধায়ী শুধু তারা নয়, গোটা জাতির জন্য শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এই শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। খালেদ মুস্তাহিদুর রহমানরা সব সময় জন্মায় না। আজকে এমন এক সময় যে চলে গেল যখন তাকে আমাদের দরকার ছিল। আসুন আমরা তার জন্য দোয়া করি তিনি যেন বেহেস্ত নসিব হয়।
শত নাগরিকের অধ্যাপক ড.আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলন, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক লুতফর রহমান, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, অধ্যাপক ড.কামরুল আহসান,ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম এ আজিজ, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ ও প্রয়াত খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানের ছেলে কানাডাপ্রবাসী ব্যাংকার খন্দকার আশফাকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।