সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন নারীসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এনিয়ে জেলায় আজ ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৮৮ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৬৪৮ জন।
করোনা উপসর্গে মৃতরা হলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া গ্রামের মঞ্জুর আলীর স্ত্রী সাহিদা খাতুন (৬০), একই উপজেলার ভদ্রখালী গ্রামের মৃত গৌরপদ অধিকারীর ছেলে গোবিন্দ অধিকারী (৬৫), কলারোয়া উপজেলার কুশডাঙ্গা গ্রামের মৃত হাজি শরিয়তউল্লাহ’র ছেলে মতিয়ারা রহমান (৮৫), একই উপজেলার ঝিকরা গ্রামের মনোতষের স্ত্রী নমিতা বালা (৫৫),তালা উপজেলার খেশরা গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের স্ত্রী নুর জাহান (৬৫) ও যশোরের কেশবপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবদুল বারী মোল্যার ছেলে লুৎফর রহমান (৮৫)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ৫ জুলাই থেকে ৩ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোর রাত ৪ টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা মারা যান।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর শনিবার পর্যন্ত মোট ১০৪ জন রোগী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ৪ জন করোনা পজেটিভ ও বাকি ১০০ জন সাসপেক্টেড। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন ও সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৯ জন। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৪ জন।
এদিকে সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় মোট ৯৪ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। যা আগের দিনের তুলনায় ২ দশমিক ১৯ শতাংশ বেশী।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ছয় জন। এ সময় সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৯৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৬৮৬ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৪০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ২৫ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৫৫৮ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ১৪ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৫৫৪ জন। জেলায় ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ৮৮ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৬৪৮ জন।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৮৩ হাজার ৮৮৯ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৭৯ হাজার ৮১০ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৬২২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৮ হাজার ৪৮৬ জন।