গাবুরা উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

আরও একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায়

নিজস্ব প্রতিনিধি: উপকূলীয় এলাকায় পুরানো বাঁধ সংস্কারের পাশাপাশি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে এক হাজার ২৩ কোটি টাকার ‘সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নং-১৫ পুনর্বাসন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পটিসহ ৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেকে ‘খুলনা জেলার পোল্ডার নং-১৪/১ পুনর্বাসন’ শীর্ষক আরও একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভা শেষে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, এক হাজার ২৩ কোটি টাকার ‘সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নং-১৫ পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পটি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি বছরেই বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ শুরু করবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একনেক বৈঠকে উত্থাপনের অপেক্ষায় থাকা ‘খুলনা জেলার পোল্ডার নং-১৪/১ পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে, এক হাজার ১৭২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। যা খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্পটির বিষয়ে কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি একনেক বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। একনেক বৈঠকে অনুমোদন পেলে চলতি বছরেই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। যা ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রকল্পটি অনুমোদন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন উপকূলীয় এলাকার মানুষ। উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে দীর্ঘ দিন আন্দোলন করছে জেলা নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া আন্দোলন করছে ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’। এই সংগঠনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, বেড়িবাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে পানির চাপ ও বাতাসের গতিবেগ বাড়লেই খুলনা-সাতক্ষীরা উপকূলের অনেক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এমনকি কয়েকটি এলাকার বাঁধ যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হতে পারে। তাই সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলো দ্রুত অনুমোদনের পাশাপাশি অনুমোদিত প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বিবেচনা করে ‘সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নং-১৫ পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়। এই ১৫ নং পোল্ডারটির তিন দিক খর¯্রােতা খোলপেটুয়া নদ ও কপোতাক্ষ নদ দ্বারা বেষ্টিত এবং দক্ষিণ পাশে খোলপেটুয়া নদীর অপর পাশে সুন্দরবন। প্রকল্পটির আওতায় পুরানো বাঁধ বা অবকাঠামোর পুনরুজ্জীবিত করে কার্যকারিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ সুবিধা দেওয়া এবং লবণাক্ততা দূরীকরণ করা হবে। এছাড়া বিদ্যমান কৃষি বা মৎস্য উৎপাদন নির্বিঘœ করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি ৩ হাজার ৪৪১ হেক্টর এলাকার কৃষি জমি চাষাবাদের আওতায় আসবে। যা এলাকার জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।

 

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।