আবু সাইদ বিশ্বাস: দীর্ঘ ৫৪৩ দিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের মাঝে যেন আনন্দের জোয়ার বইছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এ সময় শিক্ষকদের আনন্দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে দেখা গেছে। সাতক্ষীরা বালক বিদ্যালয়, ইটাগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়,আয়েনউদ্দীন মহিলা মাদ্রাসাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। দীর্ঘ ১৮ মাস অপেক্ষার পালা শেষে প্রাণহীন শিক্ষাঙ্গনে আবার প্রাণের ছোঁয়ায় ভোরে উঠেছে।শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে ছিল উৎসবের আমেজ। কর্তৃপক্ষও সমউচ্ছ্বাসে তাদের বরণ করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে একে একে সবাইকে ঢোকানো হয়েছে শ্রেণিকক্ষে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলার বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে। অনেকে জানান, ‘ঈদের’ মতো আনন্দ হচ্ছে।
ইটাগাছা সরকারি প্রাথমিকসহ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ বিরতির পর স্কুলে আসতে পেরে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস ও আনন্দ প্রকাশ করে। আয়েনউদ্দীন মহিলা মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর ছাত্রীা জানায়, দীর্ঘদিন পর মাদ্রাসায় আসার পর তাদের মনে হয়েছে প্রথম মাদ্রসায় আসার দিন যে রকম অনুভূতি হয়েছিল, আজ তাদের সেরকম অনুভূতি হচ্ছে। অনেক দিন পর সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় যেন ঈদের মতোই আনন্দ লাগছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ডিবি গার্লস হাইস্কুলে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে সারিবদ্ধভাবে। স্কুলের প্রধান গেট পার হয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, বেলুন, জরি কাগজ দিয়ে আরো একটি সুসজ্জিত গেট। সেখানে দাঁড়িয়ে একজন শিক্ষককে তাপ মাপক যন্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়। প্রধান গেটের গায়ে সাঁটানো হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত ব্যানার। বেলুনের গেট পেরিয়ে ভিতরে দেখা যায়, স্কুলের শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা। আরও একটু সামনে অগ্রসর হলে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের হাত ধৌত করার প্রয়োজনীয় উপকরণ। সেখান থেকে হাত ধুয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে প্রবেশ করতে দেখা যায়।শিক্ষার্থীদের বসানো হয় নিরাপদ সামাজিক দূরত্বে।
সাতক্ষীরা আয়েনউদ্দীন মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: রুহুল আমিন জানান,স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসার ভেতরে নেওয়া হয়। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গাইডলাইন দেন। তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেছি । আজকে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এসেছে। সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মানেন, তা নিশ্চিত করতে আমাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিয়েছি।
জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শিক।ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়। সরকারের দেওয়া শর্ত পূর্ণভাবে মেনেই শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রথম দিনটি অত্যন্ত আনন্দময় পরিবেশে উপভোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …