সব্যসাচী বিশ্বাস (অভয়নগর) যশোর:
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ঘের মালিকদের মধ্যে বৃষ্টি আতঙ্ক বিরাজ করছে। আকাশে মেঘ দেখলেই ছুটে যাচ্ছে ঘেরের পাড়ে। ঘুম নেই চোখে, স্থির বসতে পারছেন না। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের কারণে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার ভোর হতে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে ঝুমবৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির পানিতে খাল বিল কানায় কানায়। পুকুর আর বিলের পানির উচ্চতার ব্যবধান খানিকটা কমে গেছে। যত সময় পার হবে বৃষ্টির ফলে উপরে জমে থাকা পানি নিচের দিকে নামতে থাকবে। বিলের পানির উচ্চতা বাড়তে থাকবে। ঘেরের পাড় ভেসে বিলের পানি এবং ঘেরের পানি একাকার হতে চলেছে। তাইতো আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্কে অস্থির মৎসচাষীদের মন। অনেকে চেষ্টা করছে ঘেরের পাড়ে নেট দিয়ে মাছ ঘেরের মধ্যে রাখার। অনেকে ঘেরে খাবার মজুত করছে, পাড় ভেসে গেলেও যেন মাছ খাবারের লোভে বাইরে না যায়। হাইব্রিড কই, মাগুর, শিং মাছ চাষীরা বৃষ্টি হলেই ভয়ে থাকে এই মাছগুলো বৃষ্টি হলেই জলের ছোট ধারার বিপরীতে চলে বের হয়ে যাবে মালিকের জলাশয় হতে। মাথায় হাত পড়বে মালিকের। ঘেরের মাছ বড় করতে খাবার দিতে হয় প্রচুর খরচ হয়, মাছের ঘের ভেসে গেলে নিঃস্ব হবে মাছ চাষীরা। আতঙ্কে ঘুম, বিশ্রাম, শ্রান্তি কিছুই নেই তাদের।
শ্রীধরপুর ইউনিয়নের বর্ণী গ্রামের মাছ চাষী হুমায়ূন মোল্লা জানালেন, বৃষ্টি যতটুকু হয়েছে আর এতটুকু বৃষ্টি হলেই সব একাকার হয়ে যাবে।আমার ঘের প্রায় এক বিঘা জমিতে যদি ভেসে যায় তাহলে ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হবে। আর একজন মাছ চাষী মো আলীম শেখ জানালেন, তার দেড় বিঘা জমিতে কৈ এবং শিং মাছ আছে। বৃষ্টি হলেই পাড়ে দিতে হয় নেট। যদি মাছ বের হয় তাহলে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি। হবে।
উপজেলার ৬ নং বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মৎসঘেরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘেরের পানি পাড় ছুঁই ছুঁই। আর একটু বৃষ্টি হলেই মাছ বের হতে শুরু করবে। মাছ চাষী বিপুর বিশ্বাস বলেন, পাড়ে নেট টাঙিয়েছি যদি বৃষ্টি হয় তাহলে তো আর কিছু করার নেই। প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হবে। সবাই আমার মত ব্যবস্থা করেছে, এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
উপজেলার চলিশিয়া, প্রেমবাগ, সুন্দলী, পায়রা, সিদ্দিপাশা, শুভরাড়া ইউনিয়নের বর্তমান পানির অবস্থা খোজ নিয়ে জানা যায়, ঘেরের পানি পাড়ের পৃষ্ঠের ব্যবধান খুব কম ফলে ঘুমোতে পারছেন না মৎসচাষীরা। বৃষ্টির ফোটা পড়তেই ভেসে গিয়ে একাকার হয়ে যাবে বিলের পানি ও ঘেরের পানি, সব মাছ বের হবে পুকুর, বিলে খালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মাছ চাষীরা। ঘেরের পাড়ে সবজি চাষে বাম্পার হলেও এখন সকল চাষীরা বৃষ্টির ভয়ে চিন্তিত।