কোভিড পরিস্থিতিতে যৌনকর্মী এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরা কী কী সমস্যার মধ্যে রয়েছেন তা খতিয়ে দেখতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের কথা জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ, স্টেট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি এলাকা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবে। ওই স্বেচ্ছাসেবকরা যৌনকর্মীদের সমস্যার কথা তুলে ধরে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবেন। আপতত ওই রিপোর্ট মোতাবেক রাজ্যকেও সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে।
করোনা অতিমারির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই আয়ের পথ বন্ধ রয়েছে যৌনকর্মীদের। কোথাও আবার আয় অতি সামান্য। ফলে নিত্যদিন আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। এমতাবস্থায় অনেকে সংসার চালাতেও পারছেন না। নিষিদ্ধপল্লির ওই কর্মীদের অসুবিধা নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন ঐশ্বর্য অধিকারী নামে এক ব্যক্তি। মামলাকারীর আর্জি, যৌনকর্মীদের আর্থিক সহায়তা, খাদ্য ও তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার ভার বহন করুক সরকার। মামলাকারীর আইনজীবী জভেরিয়া সাব্বাহ্ বলেন, ‘‘কোভিডের কারণে জীবনযাপনের ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন যৌনকর্মীরা। সংবিধান অনুযায়ী, খাদ্য জন্মগত অধিকার হলেও এখন তাঁরা তা থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন।’’
তাঁর দাবি, ‘‘নাগরিকদের জীবিকার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য রাজ্যের যে নীতি রয়েছে ওই যৌনকর্মীদের ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। এই অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেও অনেককেই রেশন সামগ্রী দেওয়া হয়নি। কোথাও আবার তাঁদেরকে বেশি মূল্যে রেশন নিতে বাধ্য করা হয়েছে। অথচ তার পরেও ওই কর্মীদের পুষ্টিগত ও পরিমাণগত দিক থেকে পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়নি। অনেকের তো আবার রেশন কার্ডই নেই।’’ আদালতে মামলাকারীর আর্জি, সরকারের আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনায় ওই যৌনকর্মীদের পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিক আদালত।
গত মঙ্গলবার এই মামলাটির শুনানি হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত মামলাকারীর অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের নির্দেশ দেয় এবং ওই নির্দেশের ভিত্তিতে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সাহায্যের কথাও বলে আদালত। পাশাপাশি, ওই বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্যের কী মতামত রয়েছে হলফনামা আকারে তা-ও জানাতে বলেছে আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ অক্টোবর ধার্য হয়েছে।