ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক কিশোরী ছাত্রীর শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে ক্লাসে পাঠদান করিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন পঙ্কজ মধু নামের এক শিক্ষক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক।
তবে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিষয়টিকে মানবিকভাবে দেখলেও আবার অনেকেই বিষয়টিকে সাজানো নাটক বলে মনে করছেন। সচেতন মহল মনে করেন বিষয়টি ঠিক নয়। এতে শিশুটির স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে শিক্ষক পঙ্কজ মধু জানান, করোনা মহামারির প্রথম দিকে গোপনে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর বিয়ে হয়ে যায়। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বিষয়টি স্কুলের কেউ জানতো না। সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে এক ছাত্রীর অনুপস্থিতি দেখতে পাই। বিদ্যালয় থেকে ছিটকে পড়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করি। পরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার বিয়ে ও সন্তানের খবর পাই। তারপরও ছাত্রীর পরিবারকে অনুরোধ করি তাকে স্কুলে পাঠানোর। রোববার ওই ছাত্রী শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে স্কুলে আসে। সন্তান নিয়ে ওই ছাত্রীর ক্লাস করতে কষ্ট হচ্ছে দেখে শিশুটিকে আমি কোলে নিই।
তিনি আরও বলেন, ভাইরাল হবে এমন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। স্নেহ-মমতা থেকে শিশুটিকে কোলে নিয়ে ক্লাস করিয়েছি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, বিষয়টি নাটক ছাড়া আর কিছুই না। কেন সেই শিক্ষার্থী তার কোলের শিশুকে বাড়িতে না রেখে স্কুলে নিয়ে আসলো। এতে মায়ের পাশাপাশি শিশুটিরও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন ভট্টাচার্য বলেন, শিশুকে নিয়ে এভাবে স্কুলে যাওয়া সঠিক হয়নি। এতে শিশুসহ মায়ের ঝুঁকি রয়েছে। সরকার যেহেতু স্কুলের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করেননি। সেক্ষেত্রে এভাবে স্কুলে নেয়া ঠিক নয়। দুই ঘণ্টা একজন শিক্ষক কিভাবে শিশু নিয়ে ক্লাস করলেন। এ বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।
সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ একরাম উল্লাহ জানান, করোনাকালীন সময়ে শিশুকে নিয়ে এভাবে স্কুলে যাওয়ায় শিশুটির সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুধু করোনা নয় অন্যান্য রোগেরও ঝুঁকি থাকে।
সূত্র : ইউএনবি