গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশের মধ্যে সাতক্ষীরায় সর্বোচ্চ ৯১ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সারাদেশে বৃষ্টির প্রবণতা আরও দুদিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। একই সঙ্গে সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
সারাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে, তবে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টির প্রবণতা বেশি। সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সাতক্ষীরায়, ৯১ মিলিমিটার। এ সময়ে ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২৭ মিলিমিটার।
মঙ্গলবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় বৃষ্টি থাকবে বলে জানিয়েছেন।
গত রাতে ঢাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার আকাশে মেঘের সঙ্গে রোদও ছিল। তবে বেলা সোয়া ১০টার মধ্যে আকাশ মেঘে মেঘে ছেয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। থেমে থেমে চলছিল বৃষ্টি।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুছ বলেন, তেলেঙ্গানা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিরাজমান লঘুচাপটি বর্তমানে মধ্যপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল থেকে বিদায় নিয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের অন্যত্র সক্রিয় আছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আগামী দুদিন পর বৃষ্টির প্রবণতা কমতে পারে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। তাই এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে জারি করা ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখতে বলা রয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ১ ছিল কুতুবদিয়ায়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে একটানা ৩ দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় সাতক্ষীরায় আমন ক্ষেতের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একটানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আধাপাঁকা ধান মাটিতে পড়ে পানিতে ডুবে থাকায় বীজ উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা উৎপাদন না হওয়ার আশংখা করছে খামার কতৃপক্ষ।
ঝড়ো হাওয়ায় আধা কাঁচা পাঁকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়ে পানিতে ডুবে ও ধানের কুশি ভরা ফুল ঝরে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাটিতে নুয়ে পড়া পানিতে ডুবে থাকা ধান পরিপূর্ণ পুষ্ঠ না হওয়া ও ধানের কালো কালো দাগ পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি রয়েছে। তাছাড়া কুশি ভরা ধানের ফুল ঝড়ো বাতাসে পড়ে যাওয়ায় পরাগায়ন না হলে চিটা হয়ে যেতে পারে।
খামারে আমন ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছিল। দেখলে মনে হয় ঝড়ো হাওয়া পাঁকা ধান ক্ষেতে মই দিয়ে গেছে। উপকূলে অবস্থিত এ খামারটিকে লবন পানিসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করে ফসল ফলাতে হয়।