স্টাফ রিপোটার: ছেলের হাতে মার খেয়ে নিজ বাড়ি থেকে বিতাড়িত হলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক শ্রমিকনেতা বৃদ্ধ বজলুর রহমান (৭২)। আহত অবস্থায় তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত মঙ্গলবার সকালে বজলুর রহমানকে তার ছোট ছেলে আব্দুস সালাম বাবু সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ এর সাবেক এই শ্রমিকনেতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক লাবসা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। চাকুরি শেষে তিনি মাগুরা দোতলা মসজিদের পাশে ৬ কাঠা জমি কিনে একটি দোতলা বাড়ি তৈরী করেন। সেখানে তিনি বসবাস করছিলেন। তার দুই ছেলের মধ্যে আবুল কালাম সাবেক সেনাসদস্য। তিনি থাকেন ভিন্ন বাড়িতে। ছোট ছেলে আব্দুস সালাম বাবুকে নিয়ে বজলুর রহমান থাকতেন নিজের বাড়িতে।
জানা গেছে, ছোট ছেলের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি তার নামে জমি ও বাড়ি লিখে দেন। এসময় কথা ছিল বজলুর রহমান ও তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুনের আজীবন ভরনপোষন দেবেন আব্দুস সালাম। অভিযোগে প্রকাশ, কয়েকমাস আগে আব্দুস সালাম তাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। অসহায় অবস্থায় তিনি একটি বাড়িতে ভাড়া থেকে ভিক্ষা করছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ায় সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বজলুর রহমানকে তার বাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির গত ৫ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা এবং সদর থানার ওসি দেলোয়ার হুসেনের মাধ্যমে বৃদ্ধ বজলুর রহমানকে তার বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন। এসময় অভিযুক্ত ছোট ছেলে আব্দুস সালাম তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে বাবাকে নিজের কাছে আজীবন রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে বৃদ্ধ বজলুর রহমান ছোট ছেলের নামে দেওয়া তার জমি ও বাড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য আদালতে একটি মামলা করেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ বাড়িতে তিনি একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ছোট ছেলে আব্দুস সালাম বাবু। তিনি নোটিশটি ছিড়ে ফেলে দেন এবং তাকে মারধর করে আহত করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এসময় তার মোবাইল ফোন, ওষুধপত্র এবং ব্যবহার্য্য সবকিছুই বাড়িতে আটকে রাখেন। এর পরেই বজলুর রহমান স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নানের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম বাবু সাংবাদিকদের বলেন, একই বাড়িতে বাদী ও বিবাদী থাকা সম্ভব নয়। কারো কোন অঘটন ঘটলে তার দায়িত্ব কে নেবে এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এ কারনেই আমি তাকে বলেছি আপনি বাড়ি থেকে চলে যান। তবে মারধর করিনি। তার মোবাইল ও ওষুধপত্র আমার ঘরেই আছে।