কুমিল্লায় ধর্মীয় অবমাননার জেরে ঘটা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
শারদীয়া দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পন সংঘের পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
হামলা, ভাংচুর চালানো হয় অন্তুত শহরের আটটি মন্দিরে।তার জের ধরে সেদিনই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলা হয়, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন। এর পরের কয়েকদিনে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরে হামলা হয়। তাতে নোয়াখালীতে নিহত হয় দুইজন।
ঘটনার পর প্রকাশ হওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক যুবক রাত ২টার পর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পাড়ের দর্পন সংঘের পূজামণ্ডপের দিকে যাচ্ছেন। মণ্ডপটিতে কোনো সিসি ক্যামেরা ছিল না। তবে মণ্ডপ সংলগ্ন রোগাবাড়ী শাহ আব্দুল্লাহ গাজীপুরী (রহ.) এর মাজার এবং দীঘির পাড়ের একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এই দৃশ্য পায় পুলিশ।
ফুটেজে আরও দেখা যায়, ওই যুবক মাজার থেকে বেরিয়ে মণ্ডপের দিকে যাচ্ছেন। তখন তার হাতে বই জাতীয় কিছু ছিল। এরপর ৩টা ১২ মিনিটের দিকে তাকে পূজামণ্ডপের দিক থেকে ফিরে আসতে দেখা যায়, তখন তার হাতে ছিল একটি ‘গদা’।স্থানীয়রা জানায়, বুধবার ভোরে ওই পূজামণ্ডপে থাকা হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা ছিল। তখন হনুমানের হাতে থাকা গদাটি পাওয়া যায়নি।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখা ব্যক্তি ইকবাল হোসেনকে (৩৫) শনাক্ত করে পুলিশ। পেশায় রাজমিস্ত্রি ইকবাল কুমিল্লার সুজানগর এলাকার নূর আহমেদ আলমের ছেলে।এরপরই তাকে গ্রেফতার করতে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।তবে ইকবাল কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার না করায় তার অবস্থান শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
অবশেষে গত বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাত ১০টার পর সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে পরে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যেই ইকবাল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পেশায় রাজমিস্ত্রি ইকবাল কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড সুজানগর এলাকার মাছ বিক্রেতা নূর আলমের ছেলে।গ্রেফতারের পর তাকে কুমিল্লায় নিয়ে যায় পুলিশ।