একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সংগঠন হিসেবে প্রকাশ্য আদালতে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের দাবি জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক।
সোমবার ধানমণ্ডিতে সংস্থার কার্যালয়ে যুদ্ধাপরাধের অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি জানান।
ক্রিমিনাল সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার প্রসঙ্গে সানাউল বলেন, ‘জামায়াতের ইসলামীর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিচার। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বিচার শুরু করা উচিত। সংগঠন হিসেবে যখন বিচার হয়, তখন ওই সংগঠনের অঙ্গসংগঠন ও জড়িত ব্যক্তিদেরও বিচার হয়। সংগঠনের নেতৃত্বের দায় চলে আসে।’
সানাউল হক আরও বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে, ধর্মান্ধতার সুযোগ নিয়ে অনেকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। এদের সমূলে উৎপাটন করতে গেলে, জামায়াতের স্বরূপ উদ্ঘাটন করার জন্য প্রকাশ্য আদালতে এই বিচারটি হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিভিন্ন রায়ে জামায়াতকে অপরাধী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগেও এটা প্রমাণিত। কিন্তু তাদের চরিত্রের কোনো বদল হয়নি।’
তদন্ত সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা সানাউল হক বলেন, ‘একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার শুরুর পর ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে অপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হয়। এরপর ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। পরে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে সংগঠনের বিচার ও শাস্তির বিধান নেই। আজও ওই রিপোর্টটি চার্জ গঠনের জন্য ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়নি। ওই বছরই অপরাধী হিসেবে সংগঠনের শাস্তির বিধান রেখে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও গত আট বছরে আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী আর মন্ত্রিসভায় ওঠেনি। ফলে ঝুলে আছে জামায়াতের বিচার।’