আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় মাজার-ই-শরীফ শহরের একটি বাড়ি থেকে চার নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র শনিবার জানিয়েছে। নিহত নারীদের মধ্যে অন্তত একজন নারী অধিকারর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকা বলে স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ওই চার নারীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়েছে বলে তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কারি সায়েদ খোস্তি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই ব্যক্তি নিহত নারীদের বাড়িতে ডেকে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। আটকদের আদালতে তোলা হয়েছে।
খোস্তি নিহতদের পরিচয় জানাননি। তবে মাজার-ই-শরীফের এক সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ফ্রোজান সাফি নামে একজন নারী অধিকারকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছে।
২০ বছর পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে হঠিয়ে চলতি বছরের আগস্টে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা দখল করে রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত তালেবান।
তালেবানের প্রথম দফার শাসনামলে সমগ্র আফগানিস্তানে ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল কট্টরপন্থী সংগঠনটি। সে সময় নারীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল। এছাড়া তালেবান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন কড়াকড়ি ভাবে বোরকা পরে মেয়েদের বাইরে বের হওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। নারীরা কোনো আত্মীয় পুরুষ ছাড়া বাইরে যেতে পারবেন বলেও নির্দেশনা জারি করে তালেবান। কেউ এই নির্দেশ না মানলে জনসম্মুখে বেত্রাঘাতের মতো নির্মম শাস্তি পেতে হতো।
তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা দখলের পর রক্ষণশীল মনোভাব থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। কিন্তু নারীদের কাজে কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অনুমতি এখনো দেয়নি তালেবান। ১৫ আগস্ট কাবুল দখল নেওয়ার পর থেকেই নিজেদের অধিকারের দাবিতে নারীরা আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রধান শহরগুলোতে বিক্ষোভ করছে। তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো নারীকে পদ না দেওয়ার প্রতিবাদে কাবুলে বিক্ষোভ করেছে নারীরা। কাবুলসহ বিভিন্ন বড় শহরগুলোতে বিক্ষোভ রয়েছে মেয়েদের স্কুলে ফিরতে দেওয়ার দাবিতেও।