অভয়নগরে একদিনেই ১৫ দিনের স্বাক্ষর সারলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান

উপজেলা প্রতিনিধি (অভয়নগর) যশোর:

যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার এক মাদ্রাসা সুপার মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অনুপস্থিতির দিনগুলোতে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নিজের অনুপস্থিতি ঢাকতে একদিনে ১৫ দিনের স্বাক্ষর করেছেন বলে অভিযোগ।
এ ঘটনায় মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির দাতা সদস্য এসএম ফজজুল বারী। তিনি তার লিখিত অভিযোগে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার ভৈরব উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৮ নং সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের নাউলি গোপীনাথপুর মিলনী দাখিল মাদ্রাসায়।
অভিযোগ রয়েছে, উক্ত মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুর রশীদের খামখেয়ালীপনার কারনে দুই মাস ধরে মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন বন্ধ রয়েছে। দাতা সদস্য এসএম ফজলুল বারী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, অভয়নগর উপজেলার ভৈরব উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৮ নং সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের নাউলি গোপীনাথপুর মিলনী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুর রশীদ গত ১ নভেম্বর ২০২১ সোমবার হতে ১৫ নভেম্বর ২০২১সোমবার পর্যন্ত মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিলেন।
১৬ নভেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার তিনি হঠাৎ মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে একই সাথে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিতির দিনগুলোতেও স্বাক্ষর করেছেন।
লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি ইউ এন ও অফিস, ইউ এস ই ও অফিস, ডি ই ও অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলেন বলে হাজিরা খাতায় উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি নিজ কাজে বাইরে থেকে অজুহাত দেখিয়ে স্বাক্ষর করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন এলাকাবাসি ও শিক্ষকদের পক্ষে এস এম ফজলুল বারি।

অভিযোগে বলা হয়, মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুর রশিদ মাদ্রাসায় নিয়োমিত না আসায় প্রতিষ্ঠানের বেতন বন্ধ রয়েছে দুই মাস। তবে নির্ভর যোগ্যসূত্র থেকে জানা গেছে মাদ্রাসার কমিটির মেয়াদ গত ৩১ আগস্ট ২০২১ শেষ হওয়ার পর আর কোন কমিটি না করায় বেতন বন্ধ রয়েছে।
লিখিত অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, মাদ্রাসা সুপারের প্রতিষ্ঠানে না আসা, মাদ্রাসা দুপুর ১ টায় ছুটি হওয়া, জালিয়াতি নিয়োগের কারনে মামলা হওয়া, দাতা সদস্যদের সাথে বৈরি আচরনসহ প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ক্ষতির বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের আর এ মাদ্রাসায় পড়াতে অনীহা প্রকাশ করছে।
এবিষয়ে দাতা সদস্য এস এম ফজলুল বারি খোকা মুঠো ফোনে লিখিত অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসা সুপারের অসৎ আচরনে প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। শিক্ষকদের বেতন বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবন জাপন করছেন। বেতন ছাড়ানোর জন্য নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তিনি এলাকাবাসির পক্ষে আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে নাউলি মিলনী মাদ্রাসার সহকারী সুপার সিরাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনিও অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসার কাজ, অফিসের কাজসহ ব্যক্তিগত কাজেও তিনি বেশ কিছুদিন অনুপস্থিত ছিলেন। ১৬ তারিখে মাদ্রাসায় এসে একসাথে স্বাক্ষর করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুর রশীদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।