রাজধানীর রামপুরায় অনাবিল পরিবহণের একটি বাসচাপায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর নিহতের ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত রামপুরা। এই ঘটনার জেরে স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা কমপক্ষে ৯টি বাসে অগ্নিসংযোগ ও তিনটি বাস ভাঙচুর করেছেন। ভাঙচুর করা ও আগুন দেওয়া বাসের বেশিরভাই অনাবিল পরিবহণের।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা প্রথমে দায়ী বাসটিতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এবং বাস থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আহত এক ব্যক্তিকে জনতা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এরপর ওই সড়কের বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে পড়া একে একে আরও ৮টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডিআইটি রোডে সোনালী ব্যাংকের সামনে বাসচাপায় ওই শিক্ষার্থী নিহত হন। ঘটনার পরপরই বাসে আগুন দিয়ে বিক্ষুব্ধরা সড়কে অবস্থান করছেন।
ফায়ার সার্ভিস এসে ইতোমধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘সোমবার রাত ১১টার পর রামপুরা বাজারের কাছে আব্দুল্লাহপুর থেকে সায়েদাবাদগামী অনাবিল বাসের ধাক্কায় একজন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে বাসে আগুন দিয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।’
ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন এবং নিরাপদ সড়কসহ ঘাতক চালককের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। যে কারণে ঘটনার পর থেকেই ডিআইডি সড়কসহ আশপাশের এলাকার যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, রাতে ফাঁকা রাস্তা পেয়ে দুই বাসের প্রতিযোগিতায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আবার কেউ কেউ বলছেন, বাস ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের পর বাসের হেলপার ওই শিক্ষার্থীকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেয় অন্য একটি বাস। পেছন থেকে আসা অনাবিলের বাসটির নিচে পিষ্ট হন তিনি।
তবে এই দুই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।
তবে ঘটনার পর পর নিহত শিক্ষার্থীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে রামপুরা থানা পুলিশ।
তারা জানিয়েছে, নিহতের নাম মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয় (১৬)। তিনি পূর্ব রামপুরার বাসিন্দা। তিনি রামপুরা একরামুন্নেসা বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। রামপুরার তিতাস রোডে ভাড়া বাসায় থেকে চায়ের দোকান চালান মাঈনুদ্দিনের বাবা।
আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুমের অপারেটর জিয়াউর রহমান বলেন, বাসচাপায় ছাত্র নিহতের এ ঘটনায় অন্তত সাতটি বাসে আগুন দেওয়ার খবর পাই। এ ঘটনায় ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের প্রথমে দুটি ও পরে আরও একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।