এস কে সিদ্দিক , ভোমরা প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের নবগঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ এডহক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ভোমরাস্থ এ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নেতৃবৃন্দ। রেজিস্টার অব ট্রেড ইউনিয়ন, খুলনার বিভাগীয় পরিচালক স্বাক্ষরিত এক আদেশে জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপনকে আহবায়ক করে এডহক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আশরাফুজ্জামান আশু, সাবেক সহ-সভাপতিরাম কৃষ্ণ চক্রবর্তী, সাবেক অর্থ সম্পাদক এ এস এম মাকছুদ খান ও সদস্য মো. মিজানুর রহমান ।
এ সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, কাজী আকতার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক জি এম ফাত্তাহ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. সুব্রত ঘোষ, সাতক্ষীরা পৌর আ.লীগের সভাপতি শেখ নাছেরুল হক, সাধারণ সম্পাদকসাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
সংগঠন সূত্রে জানাযায়, আরাফাত-নাসিমের নেতৃত্বাধীন সর্বশেষ নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ারপূর্ব হতেই ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দর থেকে সেখানকার একটি প্রভাবশালী চক্র বাংলাদেশে কোন ট্রাক কখন ঢুকবে তার সিরিয়াল নির্ধারণের দায়িত্ব নেয়। জনৈক বারেক গাজীর নেতৃত্বাধীন ঐ চক্রটি ভোমরার দু’একজন সিএন্ডএফ নেতাকে ম্যানেজ করেও পারে প্রতি ট্রাক ৩০ হাজার টাকাহারে চাঁদানির্ধারণকরে। চাঁদানাদিলে ঐ ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকতে না দিয়ে ঘোজাডাঙ্গায় দীর্ঘদিন আটকিয়ে রাখা হয়। ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি পরিহার করতে আমদানীকারকরা বারেক গাজীর নেতৃত্বাধীন ঐ চক্রকে ট্রাক প্রতি ৩০ হাজার টাকা দিয়েই এখানে মালামাল আমদানী করে থাকে। এই টাকা বাংলাদেশের আমদানীকারকদেরই পরিশোধ করতে হয়। এরফলে আমদানীখরচ ব্যাপক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এই বন্দর ত্যাগ করে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু ভোমরাসি এন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কতিপয় নেতা ওপারে প্রতিদিন ট্রাক থেকে আদায়কৃত ৫০/৬০ লাখ টাকার একটি ক্ষুদ্র অংশ কমিশন পাওয়ায় এবং তাদের আমদানীকৃত মালামালের ট্রাকে বিশেষ ছাড় পাওয়ায় সম্পূর্ণ এই অবৈধ ব্যবসা অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মুখ বুজে হজম করাতে বাধ্য করেছে।
অপরদিকে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিল অব এন্ট্রি প্রতি এসোসিয়েশনের চাঁদা দুইশত টাকা থেকে বাড়িয়ে হটাৎ চারশত টাকা করা হয়েছে। এসব নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে এডহক কমিটি গঠন সংক্রান্ত গত ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে বিভাগীয় শ্রম পরিচালকের আদেশে বলা হয়েছে, গত ৯ অক্টোবর ২০২১ তারিখে ভোমরা কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশন এর কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শ্রম দপ্তরের তত্ত্বাবধানে দ্রুত ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক।
আদেশে আরো বলা হয়েছে, ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের গত ৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সাধারণসভা সম্পর্কে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের দুইজনকর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিলকরেছেন। উক্ত প্রতিবেদন সহতে জানাযায়, ট্রেড ইউনিয়নের ২০১৯ ও ২০২০ সালের আয় ব্যয়ের উপস্থাপিত হিসাব বিবরণী সভায় অনুমোদিত হয়নি।
সভায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ ও নির্বাচন কমিশন গঠনকরা হয়নি। সভায় পরবর্তি তিন বছরের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের নাম ঘোষণা করার উক্ত প্রক্রিয়া ট্রেড ইউনিয়নের বিদ্যমান রেজিস্ট্রিকৃত গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।
আদেশে আরো বলা হয়েছে, ভোমরা কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু উল্লিখিত সময় অতিবাহিত হলেও ইউনিয়ন কর্তৃক কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হয়নি এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি মর্মে নথিদৃষ্টে প্রতীয়মান হয়।
বিভাগীয়শ্রম পরিচালকের আদেশে আরো বলাহয়, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক রীট পিটিশন নম্বর ৯৭৯৯/২০২১ এর আদেশে পরিচালক ও রেজিস্টার ইউনিয়ন, খুলনা কেনির্দেশনা প্রদান করেছেন। উক্ত নির্দেশনা মোতাবেক একটিপত্র নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
বিভাগীয় শ্রম দপ্তর খুলনার আদেশে আগামী ৪৫ দিনেরমধ্যে নবগঠিত এডহক কমিটিকে নির্বাচন সংক্রান্ত সাধারণসভা আহবানসহ নির্বাচনী সকল কার্যক্রম পরিচালক রেজিস্টার অব ট্রেড ইউনিয়নের তত্বাবধায়নে অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ অক্টোবর ২০২১ ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের নির্বাচনী সাধারণ সভায় কোন রকম নির্বাচন ছাড়াই কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচন না করে কোটি টাকালেন দেনের মাধ্যমে কমিটি গঠন হতে পারে বলে পূর্বেই বিভিন্নপত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। এরপরও ঐ অবৈধ প্রক্রিয়া বন্ধনা করে বরং টাকার অংক আরো বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকায় কমিটি বানিজ্য সম্পন্ন হয় বলে পরবর্তীতে খবর প্রকাশিত হয়।