আ.লীগ থেকেও ‌‘বাদ’ পড়ছেন মুরাদ হাসান

অশালীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসান এবার আওয়ামী লীগ থেকেও ‘বাদ’ পড়তে যাচ্ছেন- এমনটাই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

মঙ্গলবার বিকালে গণমাধ্যমকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরবর্তী আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বেঠকে।

এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ‘সুপারিশ’ করা হবে। দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তিনি যত বড় নেতাই হোন না কেন, তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের কারণে মুরাদ সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর কিছু অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।

এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারলেও সারা দেশে দলের নেতাকর্মীরা তার ওপর বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ। এ ঘটনায় বিএনপিসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা ডা. মুরাদের পদত্যাগ দাবি করেন।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবারের মধ্যেই পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে মুরাদকে।

পরে প্রতিমন্ত্রীর তথ্য কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাশেমের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।  এ তথ্য গিয়াসউদ্দিন নিজেই যুগান্তরকে জানিয়েছেন।

এর আগে দুপুরে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তরে পাঠানো হয়।  ই-মেইলে তিনি এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুরাদ হাসান লেখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নেবেন।  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ তারিখের স্মারকমূলে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।  আমি আজ ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক। এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনিত নিবেদন, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে পদত্যাগপত্র গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।

পদত্যাগপত্রে ভুল লিখেছেন মুরাদ।  ২০১৯ সালে তাকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও পত্রে তিনি ২০২১ উল্লেখ করেন।

মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য।  তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।