স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে এবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের জান্নাত চেয়ে মোনাজাত করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এই মোনাজাতের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরালের পর মোনাজাত পরিচালনাকারী ওই নেতাকে এরইমধ্যে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে তড়িঘড়ি করে শুক্রবার রাতের আব্দুর রাক্কাজ নামের ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনাকারী অব্দুর রাজ্জাক বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। তার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ওই মোনাজাতে অংশ নেন তাহেরপুর পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ শীর্ষ নেতারা।
ভাইরাল হওয়া ১৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে মোনাজাতে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘মাবুদ জাতির জনক এবং তার পরিবারের সদস্যদের যারা হত্যা করেছেন, আল্লাহ তাদের সবাইকে জান্নাত দান করে দিও- আল্লাহ।’ এ সময় পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদসহ উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের আমিন বলতে শোনা যায়।
বিষয়টি স্বীকার করলেও মোনাজাত করতে গিয়ে ভুলবশত এটি হয়েছে বলে দাবি করেন পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ। পরে সেটির সংশোধন করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে মোনাজাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গের হত্যাকারীদের জান্নাত কামনা করায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে খন্দকার আব্দুর রাজ্জাককে। শুক্রবার রাতে জরুরি সভা করে তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগ।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা মনসুর ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত ওই পত্রে তাকে দল থেকেও স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
তাহেরপুর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর ১২টা ১ মিনিটে পৌর আওয়ামী লীগ পৌরসভার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারবর্গ, শহীদ জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন পৌর আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আবদুর রাজ্জাক। মোনাজাত পরিচালনাকালে তিনি অনাকাঙ্খিত, অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য একটি বাক্য উচ্চরণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জরুরি সভা করে নির্বাহী কমিটি।
সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে খন্দকার আব্দুর রাজ্জাককে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে তাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বাগমারা উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়।