বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটে মেয়ের বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতন, গালিগালাজ ও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে দুই মেয়ে ও তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে বাগেরহাটের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ছাহেরা বেগম নামের এক বৃদ্ধ নারী।
বাগেরহাট শহরের পুরাতন বাজার এলাকার মৃত তৈয়াবুর রহমানের স্ত্রী (নির্যাতিত মা) ছাহেরা বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে চাকুরীর কারণে বাড়িতে থাকে না। আমার মেয়ে শাহানাজ পারভীন কাজলীর স্বামী পুলিশ কনস্টেবল জুলফিকার আলী পেশাগত কারণে ঢাকায় থাকেন। যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে মেয়ে কাজলী তার এক ছেলে নিয়ে আমাদের বাড়িতেই থাকে। কিন্তু বছর দুয়েক আমার মেয়ে আমাকে নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। যাতে প্রসাব পায়খানা না করতে পারি এ জন্য বাথরুমে ও দরজা দিয়ে রাখে আমার মেয়ে। আমার অন্য মেয়ে জিনাত আলম খুকি ও তার স্বামী শামসুল আলমও পুলিশে চাকরি করার সুবাদে আমার বাড়িতে পুলিশ এনে আমাকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতিসহ হয়রানি করে। আমার মেয়ে ও দুই জামাইয়ের অত্যাচারে আমি অতিষ্ট। বৃদ্ধ বয়সে মেয়ের অত্যাচার ও গালিগালাজ আর সহ্য করতে পারি না। আমি যদি এর সুষ্ঠ বিচার না পাই তাহলে গলায় দড়ি দিয়ে মরব বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই বৃদ্ধ মা।
বৃদ্ধার ছোট ছেলে হোফিজুর রহমান বাবু বলেন, চাকুরীর কারণে আমরা দুই ভাই-ই বাইরে থাকি। এই সুযোগে আমার বোন শাহানাজ পারভীন কাজলী ও তার স্বামী আমার মাকে নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে। আমার মাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ারও চেষ্টা করেছে। আমার মার বাথরুমে দরজা দিয়ে রাখে আমার বোন। আমরা এই অত্যাচারের বিচার চাই।
বৃদ্ধার বড় ছেলের মেয়ে শারমিন রহমান শান্তা বলেন, ফুফু প্রায়ই দাদীর সাথে ঝগড়া করে। দাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমরা নিষেধ করলে আমাদের উপরও চড়াও হয় সে।
অভিযুক্ত মেয়ে শাহানাজ পারভীন কাজলী বলেন, বাবা যে বাড়িতে থাকতেন সেই বাড়িতে নিজের টাকায় ঘর তৈরি করে থাকি আমরা। ছোট ভাই বিদেশে যাওয়ার সময় স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে টাকা দিয়ে ছিলাম। সেই টাকা ফেরত চাওয়া তারা আমার উপর চড়াও হয়। মাও আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। যার ফলে আমিও মার সাথে কিছুটা ঝগড়া করেছি।
বাগেরহাট মডেল থানার এসআই কুমারেশ বলেন, আমরা বৃদ্ধ মা ও তার মেয়েকে পরামর্শ দিয়েছি পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান করে নিতে। যদি সমাধান না হয় তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।