সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: তরকারি রান্না ভালো না হওয়ার জের ধরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার দুপরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের মোকাম হাজরার পুত্র তাহেরুজ্জামান বাপ্পির বাড়িতে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালের পিছনে রসুলপুর মেহেদীবাগ গ্রামের মৃত সাইদুর রহমান মুন্নার কন্যা সুরাইয়া ইয়াসমিন তিশা (১৮) সহিত তিন বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক তাহেরুজ্জামান বাপ্পির সাথে তার বিয়ে হয় এবং তাদের একটি পুত্র সন্তান ইসমাইল জন্ম নেয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে স্বামী, শাশুরি ও নোনদ। একপর্যায়ে কষ্টের সংসারে দিন আনা দিন খাওয়া মেয়ের মা সখিনা খাতুন মেয়ের ভবিষ্যতের চিন্তা করে জামাইয়ের জন্য সোনার আংটি, মেয়ের জন্য সোনার কানের সহ ৫০ হাজার টাকার যৌতুক প্রদান করেন। এতে ক্ষ্যান্ত না হয়ে পূর্বের মত প্রতিনিয়ত আরো যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে তিশার স্বামী। কারণে-অকারণে চলে তিশার উপর অমানষিক নির্যাতন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ডিসেম্বর তরকারি রান্না ভাল না হওয়ার সূত্র ধরে স্বামী তাহেরুজ্জামান, মা ঝর্না বেগম ও নোনদ সালমা খাতুন, সুরাইয়া ইয়াসমিনকে বেদম মারধোর করে এবং একপর্যায়ে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৃত্যুকে আড়াল করতে তিশার স্বামী, শাশুড়ি ও নোনদ ঘরের মধ্যে নিয়ে আড়ার সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পোস্টমডামের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবিষয়ে তিশার মা ও স্বজনরা সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করে বলেন, যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে নির্যাতন চালিয়ে আসছে আমার জামাই বাপ্পি, মেয়ের শাশুড়ি ঝর্না বেগম ও নোনদ সালমা বেগম। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলছিল। সেকারণে সোমবার আমার মেয়ের উপড়ে তারা তিন জনে অমানষিক নির্যাতন করে হত্যা করে। আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পরও তারা আমাদের জানায়নি। আমরা লোক মুখে সংবাদ পেয়ে পুলিশকে অবগত করি। এবিষয়ে একাধিক ব্যক্তি বলেন, তিশার গলা গরম তরকারি দিয়ে ঝলসানো ছিল এবং তাকে ব্যপক নির্যাতন করে, হাতের আঙ্গুল ভাঙ্গা ও দুই পায়ে রক্ত জমাট বাধা ছিল । বিষয়টি পুলিষকে বললে পুলিশ আমাদের কোন কথা কর্ণপাত না করে তাদের পক্ষ অবলম্বন করে। তিশার মা সখিনা খাতুন আরো বলেন, নির্যাতনের কারণে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দিতে গেলে মামলা না নিয়ে আমাকে ফিরিয়ে দেয়। উক্ত বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হুসেন সাংবাদিক কে বলেন, লাশ উদ্ধার করে পোস্টমডাম করে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। পরবর্তীতে পোস্টমডামের রিপোর্ট হাতে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কথা হয় তিশার অভিযুক্ত স্বামী তাহেরুজ্জামান বাপ্পীর সাথে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, বেগুনের তরকারী রান্না ভাল না হওয়ার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গন্ডোগোল হয় এবং তরকারি বাহিরে ফেলে দিতে গেলে তিশার গায়ে লাগে। আমি ইচ্ছা করে তার গায়ে তরকারি দেয় নাই এবং তাকে নির্যাতন করি নাই।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …