ধীরে ধীরে রক্ষণশীলতার বলয় থেকে বেড়িয়ে আসছে সৌদি আরব। কয়েকদিন আগেই সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হলো সংগীত উৎসব ‘র্যাভ ইন দ্য ডেজার্ট’। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই সংগীত উৎসবে সুরের মোহনায় এই প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে প্রকাশ্যে এক সঙ্গে পা মেলালেন নারী ও পুরুষ। তারই ধারাবাহিকতায় সদ্য সমাপ্ত বাদশা আবদুল আজিজ উট উৎসবে একসঙ্গে প্যারেডে অংশ নিলেন নারী-পুরুষ।
বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সৌদি আরবে সম্প্রতি ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাদশা আবদুল আজিজ উট উৎসব। এই প্রথমবারের মতো এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন নারীরা। নিজেদের উটকে প্রতিযোগিতায় জেতাতে উটের পিঠে চড়ে রীতিমতো প্যারেডে অংশ নিয়েছেন তারা।
রাজধানী রিয়াদের উত্তরপূর্ব অংশে রুমাহ মরুভূমিতে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী সৌদি তরুণী লামিয়া-আল-রাশিদি। ছোটবেলা থেকেই উটের ব্যাপারে কৌতুহল ছিল তার। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন তিনি।
এর আগে বাদশা আবদুল আজিজ উট উৎসবে শুধু পুরুষরাই অংশ নিতেন।
লামিরার পরিবার ৪০টি উটের মালিক। এই উৎসব নারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে তিনি অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
এই উৎসবে অংশ নেওয়া প্রথম পাঁচজনের ঝুলিতে উঠেছে মোট এক মিলিয়ন সৌদি রিয়েল পুরস্কার।
উট উৎসবের প্যারেডে অংশ নিতে নারীরা সৌদি আরকেবর ঐতিহ্যবাহী কালো বোরকা পরে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মুখও ছিল কালো নেকাবে ঢাকা। অন্যদিকে পুরুষদের পরণে ছিল সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী সাদা পোশাক। ছিল পুরুষ বাদকদল। কারো হাতে ছিল তলোয়ার। উৎসবের আবহ পুরোপুরি আনতে তারা ড্রামের তালে নাচছিলেন।
নারীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে উট উৎসবের ম্যানেজার মোহাম্মদ আল হাবিবি বলেন, বেদুইন সমাজে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান আছে। নারীদের উটের মালিকানা আছে। তারা উট দেখাশোনাও করেন। সৌদির ঐতিহাসিক ঐহিত্যের অংশ হিসেবেই এই উৎসবে নারীদের অংশগ্রহণ বলে জানান তিনি।
তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরবে ইসলামী আইনকানুন বেশ কঠোরভাবেই মেনে চলা হয়। তবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৭ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশটিতে নারীদের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। গাড়ির চালকের আসনেও নারীদের হরদম দেখা যাচ্ছে দেশটির রাস্তায়।