রবিউল ইসলাম,দেবহাটা প্রতিনিধি:- দেবহাটা সখিপুরে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে মুল ওয়ারেশগণদের বঞ্চিত করে ০.০৭ একর জমিতে স্থাপনা নির্মান করে বছরের পর বছর ভোগদখলের অভিযোগ উঠেছে আবু সালেহ মো. মুছাজী লিটন নামের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মুছাজী লিটন উত্তর সখিপুর গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে ও সখিপুর রেজিষ্ট্রি অফিস সংলগ্ন সৈকত ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী।
এঘটনায় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত ওয়ারেশদের পক্ষে উপজেলার ধোপাডাঙ্গা গ্রামস্থ ভাষা সৈনিক লুৎফর রহমান সরদারের ছেলে ও সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি আবু রাহান তিতু, খুরশিদ আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকাত হোসেন, সিরাজুল ইসলামসহ অন্যান্য ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী ও বঞ্চিত ওয়ারেশদের পক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি আবু রাহান তিতু বলেন, সখিপুর রেজিস্ট্রি অফিসের পাশে সখিপুর মৌজার জেএল-৪২, ডিএস ৭৬১/১ ও এসএ ৯৫১ খতিয়ানের ১১৭৩ দাগের ৭ শতক জমিসহ অন্যান্য জমি মিলিয়ে মোট ৭৩ শতক জমির মালিক ছিলেন আমার দাদা মরহুম গোলাম সাত্তারের মাতা প্রয়াত ছফুরুন নেছা। তার মৃত্যুর পর সিদ্ধান্ত হয় যে, ছফুরুন নেছার রেখে যাওয়া সমুদয় জমির ইজারার টাকা মসজিদের উন্নয়নে দান করবেন ওয়ারেশগণ। এসব জমি দেখাশুনা ও হারির টাকা উত্তোলনসহ সকল দায়িত্ব ছিল ধোপাডাঙ্গা জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও আমাদের জমির অপর ওয়ারেশ আবু সালেহ মো. মুছাজী লিটনের। তিনি আরোও বলেন, মুছাজী লিটন একজন হাজী এবং মসজিদের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সবাই তাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু সে প্রকৃতপক্ষে একজন লেবাসধারী অর্থ আত্মসাতকারী এবং ভুমিদস্যু। বিগত প্রায় ৩০ বছর ধরে রেজিস্ট্রি অফিসের পার্শবর্তী ৭ শতক জমি আমাদের অগোচরে নিজের ভোগদখলে রেখে সেখানে সৈকত ট্রেডার্স নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরী এবং ভোগদখল করে আসছে অভিযুক্ত মুছাজী লিটন।
এছাড়া আমাদের ওয়ারেশদের অন্যান্য জমি থেকে হারী বাবদ প্রাপ্ত টাকা ধোপাডাঙ্গা জামে মসজিদে দান না করে বরং বছরের পর বছর নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখে আত্মসাত করে আসছে সে। এমনকি মসজিদে দানকৃত আমাদের ওই টাকা দিয়ে মুছাজী লিটন দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা বানিজ্য করে আসছে। আবু রাহান তিতু বলেন, ধোপাডাঙ্গা জামে মসজিদের বর্তমান সভাপতি আমি। সভাপতি মনোনীত হওয়ার পর থেকে আমিসহ মসজিদ কমিটির অন্যান্যরা বারবার তাকে মসজিদের টাকার হিসাব দিতে বললেও কারো কথার তোয়াক্কা না করে সে মসজিদের টাকা আত্মসাত এবং রেজিস্ট্রি অফিস সম্মুখের অন্যান্য ওয়ারেশদের জমিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সহ ভোগদখল করে আসছে বলেও মুছাজী লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আবু রাহান তিতু। উক্ত লেবাসধারী মুছাজী লিটনের জবরদখলকৃত ওই সম্পত্তি প্রত্যেক ওয়ারেশগণের মধ্যে সুষ্ঠভাবে বন্টন হয় সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন আবু রাহান তিতু।
মসজিদের অর্থ আত্মসাত এবং ওয়ারেশগণকে ফাঁকি দিয়ে সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন অভিযুক্ত মুছাজী লিটন। ‘সাংবাদিকদের কোন কথার জবাব দিবনা’ বলে একপর্যায়ে মোবাইল কলটি ডিসকানেক্ট করে দেন তিনি।