মৃত্যুর আগে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে যা বলেছিলেন নায়িকা শিমু

মরদেহ উদ্ধারের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

শিমুকে (৩৫) হত্যার দায় শিকার করেছেন তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল। পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীকে খুন করেন নোবেল। মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার।

তবে শিমুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর থেকেই গুঞ্জন রটে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে চিত্রনায়ক জায়েদ খান জড়িত। যদিও এর কোনো সত্যতা মেলেনি এখনবধি।

তবে এমন গুঞ্জন রটানোর নেপথ্যে রয়েছে শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে অভিনেত্রী শিমুর কিছু বক্তব্য। যার সবই ছিল জায়েদ খানের বিরুদ্ধে।

কারণ অভিনেত্রীর সদস্যপদ বাতিল করেছিল মিশা-জায়েদ প্যানেল কমিটি। সমিতির ভোটাধিকার হারানো ১৮৪ সদস্যের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে শিমু ছিলেন সক্রিয়।

এ নিয়ে কয়েকদিন আগে এফডিসিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জায়েদ খানের ওপর ক্ষোভ উগড়ে দেন শিমু।

তিনি বলেছিলেন, ‘আমার সদস্য পদ বাতিল করা ছিল জায়েদ খানের ব্যক্তিগত আক্রোশ। আমি সিনেমা জগতে আসি ২০০৪ সালে। জায়েদ আসে ২০০৭-এ। আমি যখন নায়িকা তখন জায়েদ খান সিনেমায় চান্স পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছিল। সে কোন সাহসে আমাকে বাদ দিতে পারে?’

কী কারণ সদস্যপদ বাতিল হলো তার সে প্রশ্নে শিমু বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে আমি সমিতিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, আমাকে বাদ দেওয়ার কারণ কী? তখন সমিতি জানাল, দুই বছর সিনেমার সঙ্গে যুক্ত না থাকলে তাকে শিল্পী সমিতিতে রাখা হবে না। আমার শেষ ছবি ছিল জামাই শ্বশুর, অমিত হাসানের বিপরীতে ( দুই বছরের বেশি আগে)। যে কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে আমাকে। কিন্তু আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, শাবানা ম্যাডাম, ববিতা ম্যাডাম থেকে এ নিয়ম শুরু করেন। আমি তো অনেক পরে আসছি। তারা তো অনেক বছর সিনেমা করেন না। আসলে আমি বুঝতে পারছি এখানে ব্যক্তিগত আ্রক্রোশ কাজ করছে। আমার ভোট আমি যাকে খুশি তাকে দিব। শাকিবকে দিব, মৌসুমী আপুকে দিব। আমার যাকে ভালো লাগে। আমার ভোটটা সে (জায়েদ খান) পাবে না, তাই আমাকে বাদ করে দিয়েছে। এফডিসিতে এসে একজন শিল্পী তৈরি হতে অনেক শ্রম দিতে হয়। আর সে (জায়েদ খান) এক কথায় বাদ দিয়ে দেন একজন শিল্পীকে। শিল্পী কি জিনিস সে বুঝে? এই সাধারণ সম্পাদক আমি চাই না।’

প্রসঙ্গত, স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর গ্রিনরোড এলাকার বাসায় থাকতেন অভিনেত্রী শিমু।  রোববার শুটিংয়ের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। তার ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। স্ত্রীর নিখোঁজের বিষয়টি থানায় জিডি করেন শিমুর স্বামী নোবেল।

এর মধ্যে সোমবার দুপুরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে বস্তাবন্দি এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে রাতে গিয়ে ওই লাশ শিমুর বলে শনাক্ত করেন তার বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন।

প্রথমসারির অভিনেত্রী না হলেও দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন শিমু। ১৮টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। শুধু রূপালি পর্দায় নয়; ছোট পর্দায়ও শিমুর পদাচরণ ছিল। বহু নাটকে দেখা গেছে তাকে। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’- এ দেখা গেছে তাকে।

Check Also

ট্রাইব্যুনালে আ.লীগ নেতাদের বিচার দেখতে এসে যা বললেন সাঈদী পুত্র

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।