প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউনিয়নের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই মামলায় আদালত তালা উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারকে গণনাকৃত ব্যালট নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেও তা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হয়নি। সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার বৃহস্পতিবার আদালতে বস্তা খোলমেলা অবস্থায় ওইসব ব্যালট নিয়ে আসায় আদালত তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, সরুলিয়া ইউনিয়নে গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আব্দুল হাই। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী আব্দুর রব আনারস প্রতীক নিয়ে ৩৫১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
জানা গেছে, নির্বাচনের পর নির্ধারিত সময়ে শেখ আব্দুল হাই চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহণ করে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করে আসছিলেন। এরই মধ্যে পরাজিত প্রার্থী আব্দুর রব সাতক্ষীরা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানান। নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাসিরুদ্দিন ফরাজী গত ৫ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত নথি তলবের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার তালা উপজেলার রিটার্নিং অফিসার রেজাউল করিম ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাহুল রায় ব্যালট ভর্তি ৫টি বস্তা নিয়ে আদালতে হাজিরা দেন। এসব বস্তার কোনটিই সিলগালা করা ছিল না। ৪টির মুখ রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। অপরটি ছিল খোলা। নিয়ম অনুযায়ী সকল বস্তাই সিলগালা করে রাখার কথা। আদালত সিলগালা বিহীন অবস্থায় এসব কাগজপত্র গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে মামলার নতুন দিন ধার্য্য করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ^াস জানান, আমি বস্তাগুলো মুখ বাঁধা অবস্থায় গাড়িতে পুলিশ হেফাজতে দেখেছি। তবে মোবাইলে আমাকে একজন ব্যক্তি একটি বস্তার মুখ খোলার ভিডিওচিত্র দেখিয়েছেন। এসময় সেখানে তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারও উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার বলেন, আমিও ভিডিওচিত্র দেখে ব্যালটভর্তি বস্তাগুলো দেখতে যাই। আমার নজরেও আসে একটি বস্তার মুখ খোলা। এই বিষয়ে আমি নির্বাচন কর্মকর্তা এবং রিটার্নিং অফিসারকে প্রশ্ন করলে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। বরং বলেছেন, এই উপজেলার নির্বাচনের পর কোন বস্তার মুখই সিলগালা করা ছিল না।
বিষয়টি সম্পর্কে সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বলেন, আমার নির্বাচন এবং শপথ গ্রহণ পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনাকে বাঁধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে ভোটে পরাজিত আব্দুর রব এই ধরণের মামলা করে গোটা নির্বাচন পরিচালনাকারী কর্মকর্তা এবং আমাকে হয়রানি করছেন। আমি এর আইনগত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছি।