বিলাল মাহিনী, যশোর :
শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন তথা মাশরুম চাষে সাফল্যের আশা করছেন মাস্টার নাজমুল হুদা। শিক্ষকতা করেন যশোরের অভয়নগর উপজেলার শিল্পশহর নওয়াপাড়ার একটি প্রাইভেট স্কুলে। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় ব্যয় সংকুলান করতে কৃষিতে যুক্ত হয়েছেন তিনি। তিনি জানান, মাশরুম এক ধরণের সুস্বাদু, অত্যধিক পুষ্টিকর, প্রচ- ঔষধি গুণসম্পন্ন সম্পূর্ণ হালাল সবজি। এতে খাদ্যেও যে মৌলিক ৬টি উপাদান রয়েছে, সেসব উপাদানের সবগুলোই মাশরুমের মধ্যে আছে। মাশরুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে, উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার) নিয়ন্ত্রক, হৃদরোগ প্রতিরোধক, যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে। মাশরুমে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, মিনারেল, অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।
সরজমিনে মাস্টার নাজমুল হুদার মাশরুম চাষ প্রদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত পরিবেশে শিল্প শহর নওয়াপাড়ার সরকারি নওয়াপাড়া কলেজের পাশে মাশরুম খামারটি গড়ে তুলেছেন তিনি। প্রাকৃতিক উপায়ে কোনোরূপ রাসায়নিক সার ব্যবহার ছাড়াই মাশরুম চাষে সাফল্য দেখছেন তিনি। তিনি বলেন, মাশরুম চাষ শুরুর ২০-২৫ দিনের মাথায় উৎপাদন শুরু হয়। প্রতি কেজি মাশরুম ৩০০-৪০০ টাকা এবং শুকনো মাশরুম কেজি প্রতি ৮’শ থেকে হাজার টাকা।
মাশরুমে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে ও গাঁটের ব্যথা কমাতে মাশরুমের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। মাশরুমে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। সুন্দর ত্বক পেতে চাইলে খেতে পারেন মাশরুম, কারণ এটি ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে। মাশরুমে থাকা এনজাইম খাবার হজম করায় ও অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। বয়সজনিত কারণে যে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার রোগ প্রতিরোধ করে মাশরুম। নিয়মিত মাশরুম খেলে হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিস প্রতিরোধ করাও সম্ভব। মাশরুমে সোডিয়ামের পরিমাণ খুব কম, এটি কিডনি-সংক্রান্ত রোগ হওয়া থেকেও বাঁচাতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিবিদ ড. মো. আখতারুজ্জামান।
শিক্ষক নাজমুল হুদা আশা করছেন, উৎপাদন ঠিক থাকলে এবং ন্যায্য মূল্যে বাজারজাত করতে পারলে সফলতা আসবে মাশরুম চাষ থেকে।