জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস (ইউনেস্কো) ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। বাঘ ও হরিণের পরই এ বনের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বানর। সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্যকে আলিঙ্গন করে রেখেছে এই প্রাণী।
চলতি শীত মৌসুমে ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্র তার মধ্যে অন্যতম। পর্যটকদের দেখলেই এখানে খাদ্য খেতে দল বেঁধে ছুটে আসে বানর। এ সময় পর্যটকরা বানরদের চিপস, সফট ড্রিংকসসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার খাইয়ে থাকেন। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এই পর্যটনকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেলো এমন চিত্র।
তবে এতে খাদ্যভ্যাস বদলে যাচ্ছে সুন্দরবনের বানরদের। ফলে সুন্দরবনের বানর আর আগের মতো গাছের ফল, কচিপাতা বা কাঁকড়া ধরে খাচ্ছে না। এই অভ্যাস বদলের ফলে বানরের উৎপাতে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বিপজ্জনক আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন সেভ দ্য সুন্দরবনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মানুষের এত কাছাকাছি থাকায় বানরদের মধ্যে নানা ধরনের রোগ সংক্রমণ হওয়ার আশষ্কা থেকে যাচ্ছে। যা গভীর জঙ্গলে মহামারির মতোই ছড়িয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে গোটা সুন্দরবনেরই পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হবে, সেটা বলাই বাহুল্য। এছাড়া বানরের খাদ্যাভ্যাস বদলে যাওয়াতে প্রাকৃতিক স্থিতি কিছুটা নষ্ট হচ্ছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, সুন্দরবনে বানরের দল যেমন গাছ থেকে গাছে লাফিয়ে বেড়ায়, তেমনই জমিতে তাদের সঙ্গে সঙ্গে চলে হরিণের দল এবং অন্যান্য তৃণভোজী প্রাণীরা। কারণ বানর গাছে উঠে যত ফল বা পাতা খায়, তার চেয়ে বেশি ফল-পাতা নিচে ফেলে। গাছের তলায় হরিণেরা সেসব কুড়িয়ে খায়। কিন্তু বানরের সঙ্গে হরিণের ঘুরে বেড়ানোর আরও একটা কারণ আছে। বাঘ শিকার ধরতে এলে গাছের উঁচু ডালে বসা বানর সবার আগে দেখতে পায় এবং চিৎকার করে সবাইকে সতর্ক করে দেয়, তাতে সাবধান হয়ে যায় হরিণের দলও। ফাস্ট ফুডের লোভে বানরের দল জঙ্গল ছাড়া হওয়ায় এই চিরাচরিত নিয়ম ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ট্যুরিস্ট রিসোর্ট হয়তো বন্ধ করা যাবে না, কিন্তু তাদের উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলাকে নিয়মে বাঁধতে হবে। ঢাকা পাত্রে উচ্ছিষ্ট ফেলে প্রতিদিন নিয়ম করে সেটা পরিষ্কার করতে হবে। আর পর্যটকদের বানরকে খাবার দেওয়া বন্ধ করতে হবে। আচরণবিধি না মানলে শাস্তি বা জরিমানা করতে হবে। এখনই সাবধান না হলে এক ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে সুন্দরবন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের হরিণ, বানর, শূকর, উদবিড়াল বা ভোঁদড়ের সবশেষে শুমারি হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। ওই শুমারির তথ্য অনুযায়ী, বনে বানর আছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার।
সুন্দরবনে আসা পর্যটক রবিউল ইসলাম ও হাফিজুর রহমান বলেন, করমজল পর্যটন কেন্দ্রে ঢোকার সময় আমাদের সঙ্গে রুটি ও চিপস ছিল। এ সময় কয়েকটি বানর দল বেঁধে এসে ছোঁ মেরে খাবার নিয়ে যায়।
তবে এই বানরের উৎপাতের কারণ তাদের খাদ্য সংকট এ কথা বলতে নারাজ পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির।
তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সবসময় লবন জাতীয় খাবার পছন্দ করে। এখানে যখন পর্যটকরা আসেন তারা ওই সব প্রাণীদের খাবার তুলে দেন। এ কারণে কোনও কোনও পর্যটককে আক্রমণ করে বসে এসব বানর।
- স্বেচ্ছাসেবকদের ১৮ হাজার মেশিন গান দিলো কিয়েভ
- মায়ের সঙ্গে অভিমান করে মেয়ের আত্মহত্যার অভিযোগ
- পর্যটক দেখলেই ছুটে আসে বানরের দল, বদলে যাচ্ছে খাদ্যাভ্যাস
- আধুনিকতাকে ধারণ ও লালন
- মাদকের বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের কঠোর বার্তা
- অমুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব বাধ্যতামূলক করার অভিযোগ হিন্দু মহাজোটের
- হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীকে রাস্তায় ফেলে গেলেন আয়া
- দুর্দান্ত ক্যাচের জন্য জয়কে পুরস্কার দেবেন প্রধানমন্ত্রী
- কিয়েভে ঢুকছে ইউক্রেনের সামরিক যান
- একে-৪৭ হাতে কিয়েভের রাস্তায় ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট