ইউক্রেনে আটকা পড়া সাতক্ষীরার ছেলে মুনসুরুলকে ফিরে পেতে পরিবারের আহাজারি

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অলিভিয়া সৈকতে আটকে পড়েছে বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। এই জাহাজে আটকা পড়েছেন সাতক্ষীরার ছেলে মুনসুরুল আমীন খাঁন (৩৬)। এতেকরে চরম অনিশ্চয়তা আর উদ্বেগে দিন পার করছেন মুনসুরুল আমীনের পরিবার সদস্যরা।মুনসুরুল আমীন খাঁন বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটিতে চীফ অফিসার (ক্যাপ্টেন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরা শহরের নারকেলতলা এলাকার সেলিম খাঁনের ছেলে।
খোজঁ নিয়ে জানা যায়, ১৬ বছর আগে জাহাজের চীফ অফিসার (ক্যাপ্টেন) পদে চাকুরীতে যোগদান করেন মুনসুরুল আমীন খাঁন। সর্বশেষ তিন মাস আগে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। নিজ এলাকায় গিনি নামেই পরিচিত ছিলেন মুনসুরুল। মুনসুরুল আমীনের তিন ছেলে। ফাহিমি ও ফারহান (১০) যমজ ভাই। ছোট ছেলে ফারদিনের বয়স তিন বছর। যমজ দুই ছেলে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি মুনসুরুল আমীনসহ সব বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগ কামনা করেছেন মুনসুরলের পরিবারের সদস্যরা।যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেনে আটকা পড়েই বাড়িতে খবর পাঠান ক্যাপ্টেন মনসুরুল আমীন খান বলে জানান তার পিতা সেলিম খাঁন। এসময় তিনি বলেন,  বলেন, বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বাড়িতে কথা বলেছে গিনি। জানিয়েছে ভালো আছে। সন্ধ্যার দিকে ইউক্রেনের ওয়ালভিয়া বন্দরে তাদেরকে নামানো হয়েছে। এখন সেখানেই রয়েছে। বাড়ির সকলেই গিনির জন্য চিন্তিত। ওর মা, স্ত্রী সারাদিন ওর জন্য কান্নাকাটি করছে।

মুনসুরুল আমীনের স্ত্রী আশকুরা সুলতানা তাঁর স্বামীর বরাত দিয়ে জানান, কৃষ্ণসাগরের অলিভিয়া বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ব্রিজে একটি রকেট এসে পড়লে বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মারা যায়। জাহাজের ডেক বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। রাডারও কাজ করছে না। জ্বালানি সংকটেও পড়েছে জাহাজটি। তবে খাদ্যের সংকট এখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন মুনসুরুল আমীন। ‘থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। তাঁর মৃত্যু আমাদের পীড়া দিচ্ছে। তবে বর্তমানে তাঁর মরদেহ জাহাজেই রয়েছে। পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি পাওয়ার সাপ্লাইয়ে সীমিতভাবে কোনোরকমে চলছে। আর আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি, পরবর্তীতে আবারও হামলা হয় কিনা?’  এসময় নিজ স্বামীসহ জাহাজটিতে আটকে পড়া সকল বাংলাদেশিদের দ্রুততম সময়ের ভিতরে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) গোলাম কবির বলেন, বিষয়টি শুনেছি জাহাজের ক্যাপ্টেন একজনের বাড়ি সাতক্ষীরাতে। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমন কোন ম্যাসেজ এখনো আমরা পাইনি।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।