সাবেক বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর বেঁচে থাকা ও মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল এখনও কাটেনি। হারিছ চৌধুরী ঢাকায় অবস্থানরত অবস্থায় মারা গেছেন—গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হলেও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আজও দেওয়া হয়নি। এ কারণে এ বিষয়ে জনমনে যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে সেটি কাটছে না।
হারিছ চৌধুরীর পরিচয় শনাক্তের তার মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার কথা উঠেছে। তবে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা চৌধুরীর এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পায়নি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সংস্থাটি বলছে, সামিরা যদি সত্যিই তার বাবার পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে চান, তাহলে তাকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। প্রক্রিয়া মেনে আবেদন করতে হবে। কোনো খোলা চিঠিতে কাজ হবে না।
এ বিষয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও সিআইডির প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা মিডিয়ার কাছ থেকে হারিছের মেয়ের একটা চিঠির কথা শুনেছি। তবে এ রকম কোনো চিঠি আমরা হাতে পাইনি। পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় কেউ আগ্রহী হয়ে থাকলে তাকে আইন অনুযায়ী এগোতে হবে।
মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, কারও মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন আছে। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে ডিএনএ অ্যাক্টও অনুসরণ করতে হয়। হারিছ চৌধুরীর বিষয়ে এখন পর্যন্ত এ-সংক্রান্ত কোনো আলোচনা হয়নি।
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, প্রয়োজনে হারিছ চৌধুরীর ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
যদিও সিআইডির এখন পর্যন্ত অবস্থান হচ্ছে হারিছের পরিবার আবেদন না করলে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে না।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। তিনি মারা গেছেন বলে চলতি বছরের শুরুর দিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে।
গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকার একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, হারিছ চৌধুরী করোনায় সংক্রমিত হয়ে ঢাকায় মারা গেছেন। ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে হারিছের প্রবাসী মেয়ে সামিরা চৌধুরীর বরাত দিয়ে বলা হয়, তিনি গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।
গত ৬ মার্চ পত্রিকাটির আরেকটি প্রতিবেদনে ‘হারিছ নয়, মাহমুদুর রহমান মারা গেছেন’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, হারিছ প্রায় এক যুগ ধরে ঢাকায় বসবাস করতেন। তিনি মাহমুদুর রহমান ছদ্মনামে পাসপোর্টও করিয়েছিলেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর পর তাকে সাভারে দাফন করা হয়।
এদিকে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে পরিচয় নিশ্চিতের জন্য খোলা চিঠি লেখেন তার মেয়ে সামিরা চৌধুরী। সামিরার দাবি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও সিআইডি প্রধানের কাছেও এই আবেদন তিনি পাঠিয়েছেন। তবে সিআইডি বলছে, এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পায়নি তারা।