সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ আর নেই

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। আজ শনিবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

তার জামাতা অধ্যাপক আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী  জানান, তিনি গতকাল রাত থেকে সিএমএইচে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার ছোট ছেলে সোহেল আহমদ তাকে মোবাইল ফোনে পিতার মৃত্যু সংবাদ দেন।

তিনি আরও জানান, এখনও কিছু চূড়ান্ত না হলেও যেহেতু তিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন সেহেতু হাইকোর্টে একটি ও গ্রামের বাড়িতে একটি জানাজা শেষে তাকে বনানীতে দাফন করা হবে; যেখানে তার স্ত্রী ও কন্যা শায়িত আছেন।

১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পেমই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। তিনি এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯০ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি

এরশাদ পদত্যাগ করার পর রাষ্ট্রপতির পদে কে আসবে, নির্বাচন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে থাকবেন- সেই প্রশ্নে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলগুলো = একমত হতে পারছিল না। পরে প্রধান বিচারপতিকে সেই দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়। আবার সুপ্রিম কোর্টে ফেরার শর্ত দিয়ে সাহাবুদ্দীন আহমদ তাতে রাজি হন।

মওদুদ আহমেদ উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলে সেই দায়িত্বে আসেন সাহাবুদ্দীন। ৬ ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা ছাড়লে সাহাবুদ্দীন হন রাষ্ট্রপতি। পরে তার নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়।

নির্বাচনের পর আবার প্রধান বিচারপতির পদে ফেরেন তিনি। তার সেই ফেরার জন্য দেশের সংবিধানেও পরিবর্তন আনতে হয়েছিল। চাকরির মেয়াদ শেষে ওই পদ থেকেই অবসরে যান তিনি।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সাহাবুদ্দীন আহমদ। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্বে ছিলেন।

দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান সাহাবুদ্দীন আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা আহমদ।

তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সিতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পেমই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম তালুকদার রিসাত আহমেদ; তিনি একজন সমাজসেবী ও এলাকায় জনহিতৈষী ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন। শাহাবুদ্দিন নান্দাইলে তার বোনের বাড়িতে বড় হন।

Check Also

আশাশুনিতে টঙ্গী ইজতেমায় হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।ঢাকার টঙ্গীত ইজতেমা-মাঠে নিরীহ মুসল্লিদের উপর উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সাদ পন্থীদের বর্বরোচিত হামলা ও পরিকল্পিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।