আবু সাইদ বিশ্বাস: সাতক্ষীরা: অনিয়মের মধ্যেই সাতক্ষীরায় টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। রোববার (২০ মার্চ) দপুরে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৫,৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে ইটাগাছা আয়েনউদ্দীন মাদ্রাসা মাঠে পণ্য বিক্রির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। এসময় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা,স্থানীয় কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালু ,মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: রুহুল আমিন উপুস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল ১০টা দিকে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের সার্বিক খোজ খবর নিয়ে যান পৌর মেয়ার তাসকিন আহম্মেদ চিশতি।
ভিজিডি ও অতিদরিদ্র এবং করোনাকালীন সহযোগিতাপ্রাপ্তদের মধ্যে টিসিবি পণ্য বিক্রয়ের কথা থাকলেও ভুক্তভোগী অনেকে টিসিবির এই পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ করেছে। কর্তপক্ষ বলছে নাম যাচাই-বাছাই করে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাতেও যদি কোনো অসংগতি থাকে, তাহলে তা আবার ঠিক করা হবে এবং যারা তালিকা তৈরিতে অনিয়ম করবে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ^াস দেন জেলা প্রশাসন।
সাতক্ষীরা জেলায় গরিব মানুষের সংখ্যা বেশি কার্ডের পরিমাণ বাড়ানো হলে আরও বেশিসংখ্যক মানুষ পণ্য পেতেন। পণ্য বিক্রয়কালে জেলা প্রশাসক আগতের পণ্য ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ভবিষ্যতে কার্ডের পরিমাণ বাড়ানোর আশ^াস দেন। এর আগে সকালে সাতক্ষীরা গণমুখি মাঠে ১,২,৩,৪,৮ ও ৯ নং ওয়াডের ১৮৯০ জনের মাঝে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়। সাতক্ষীলা পৌরসভায় মোট ২ হাজার ৬৯৪ জনের মাঝে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হবে। ২১ মার্চ ও বিতরণ করা হবে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায় সাতক্ষীরা জেলায় ৭৩ হাজার ৭৯৭জন বিশেষ কার্ডধারি টিসিবি’র পণ্য দেওয়া হবে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে রবিবারসহ ২ বার হৃাসকৃত মুল্যে বিশেষ কার্ডধারিদের মাঝে টিসিবি’র পণ্য সরবরাহ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ২০০ লিটার সয়াবিন তেল, ১৫১.২০০ মেট্রিক টন চিনি ও ১৫১.২০০ মেট্রিক টন মসুর ডাল হৃাসকৃত মুল্যে সরবরাহ করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলায় টিসিবি’র পণ্য সরবরাহের জন্য ৭৩ হাজার ৭৯৭ জনকে বিশেষ কার্ড প্রদানের জন্য তালিকা করা হয়েছে। উপজেলাভিত্তিক কার্ড প্রদানের বিতরণের তথ্য হলো, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৭ হাজার ১৪৪টি, তালা উপজেলায় ১২ হাজার ৪০১টি, দেবহাটা উপজেলায় ৩ হাজার ৭৪১টি, কলারোয়া উপজেলায় ৮ হাজার ৬২০টি, আশাশুনি উপজেলায় ১০ হাজার ৪৬টি, শ্যামনগর উপজেলায় ১০ হাজার ৫৭০টি এবং কালীগঞ্জ উপজেলায় ১১ হাজার ২৭৫টি কাডৃ বিতরনে করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এলক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলায় ৪৬ জন টিসিবি’র ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক বিশেষ কার্ডধারি ব্যক্তি ২ কেজি মসুরের ডাল, ২ কেজি চিনি ও ২ লিটার সয়াবিন তেল পাবেন। প্রতি কেজি চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ টাকা। ডালের প্রতি কেজি ডালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা এবং প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা। উপজেলাওয়ারী তথ্য দিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ও সাতক্ষীরা পৌরসভায় উপকারভোগীর সংখ্যা ১৭ হাজার ১৪৪জন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৭ হাজার ১৪৪টি কার্ডের মধ্যে সাতক্ষীরা পৌরসভায় ২ হাজার ৬৯৪টি পরিবার, বল্লী ইউনিয়নে ৬০৮টি, লাবসা ইউনিয়নে ১ হাজার ২৬৮টি, ঘোনা ইউনিয়নে ৬৯৮টি, ভোমরা ইউনিয়নে ১ হাজার ১১৬টি, আলীপুর ইউনিয়নে ১ হাজার ১০০টি, আগরদাঁড়ী ইউনিয়নে ১ হাজার ৩০৯টি, শিবপুর ইউনিয়নে ৯০৪টি, বাঁশদহা ইউনিয়নে ৮৮৯টি, ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নে ১ হাজার ১২৪টি, বৈকারী ইউনিয়নে ৯৪৪টি, কুশখালী ইউনিয়নে ৯২০টি, ধুলিহর ইউনিয়নে ১ হাজার ৩০৯টি, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নে ১ হাজার ০৫৩টি ও ফিংড়ী ইউনিয়নে ১ হাজার ২০৮টি পরিবার হৃাসকৃত মুল্যে টিসিবি’র পণ্য পাবেন। এখানে ডিলারের সংখ্যা ৯জন। দেবহাটা উপজেলায় ৩ হাজার ৭৪১টি কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে কুলিয়া ইউনিয়নে ১০১২ পরিবার, পারুলিয়া ইউনিয়নে ৮১৮ পরিবার, সখিপুর ইউনিয়নে ৫৮০ পরিবার, নওয়াপাড়া ইউনিয়নে ৮৬২ পরিবার, দেবহাটা সদর ইউনিয়নে ৪৬৯ পরিবারকে এই কার্ড প্রদান করা হচ্ছে।
সূত্র বলছে ২০ মার্চ জেলাতে সীমিত সংখ্যক কার্ডধারীদের মাঝে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়েছে। প্রকৃতদের মাঝে কার্ড বিতরণ না করে বিমেষ মহলের মধ্যে এই কার্ড বিতরণ করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানায়।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …