খালিদ হাসান, বাগেরহাট প্রতিনিধি:
জাতীয় অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর মোংলা। এক সময়ের পরিত্যক্ত এ বন্দরটি ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত ১৩ বছরে মোংলা বন্দরে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কারনে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পেয়েছে বন্দরটি।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোংলা বন্দরের উন্নয়নে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ১৫ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের মোট ব্যয় হয়েছে ১৩৭২ কোটি ৬৭ লাখ ৩১ হাজার টাকা। ভিশন- ২০৪১ কে সামনে রেখে আরো ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। চলমান ৯ টি প্রকল্পের মধ্যে বন্দরে আগত দেশী বিদেশী জাহাজের চলাচল ও নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং এর প্রদত্ত সেবার মান উন্নয়নে গত ১৬ মার্চ ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (ভিটিএমআইএস) উদ্বোধন করা হয়েছে। ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এমপি।
এছাড়াও সমুদ্রগামী জাহাজ, বন্দর অফিস ও আবাসিক এলাকায় সুপেয় পানির চাহিদা পূরণে সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে। বঙ্গোপসাগর থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটারের নৌ চ্যানেলে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আনয়নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশনের লক্ষ্যে ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বন্দর পর্যন্ত রেললাইন সংযোজন করা হয়েছে। ছয় লেনের রাস্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু এবং রেল লাইন চালু হলে বন্দরের গতি আরো বেড়ে যাবে। রিজিওনাল কানেক্টিভিটি বেড়ে যাবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা প্রধান জহিরুল হক জানান, বন্দর কেন্দ্রিক অন্যান্য অবকাঠামোসহ পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর রাজধানী ঢাকার সাথে মোংলা বন্দরের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে বন্দরের ব্যবহার বহুগুনে বেড়ে যাবে। এ বিবেচনায় ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মোকাবেলার জন্য মোংলা বন্দরকে আরো গতিশীল করতে সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা প্রয়োজন তা সবই করা হচ্ছে। সম্প্রতি পরিচালিত অভিক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২৫ -৩০ সালের মধ্যে মোংলা বন্দরে বছরে ৩ হাজার জাহাজ, ৩০ হাজার গাড়ি আমদানি, ৮ লাখ টিইউজ কন্টেইনার ও ৪ কোটি মে.টন কার্গো হ্যান্ডলিং করার সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিসহ বন্দরের সার্বিক অবকাঠামো নির্মাণ ও আধুনিকায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।