সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

রাসেল হোসেন

ভাষা আন্দোলনের অগ্র সৈনিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখার জিএস, বর্ষীয়ান রাজনীতিক,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর,আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, একাধিকবার নির্বাচিত সাংসদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান ২০১৩ সালের ২০ মার্চ মৃত্যু বরণ করেন। আজ তাঁর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর বাবা মেহের আলী মিঞা ছিলেন একজন আইনজীবী, তৎকালীন ময়মনসিংহের লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা বোর্ডের সদস্য।তার স্ত্রী আইভি রহমানও একজন সক্রিয় কর্মী বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, ও গণমানুষের নেত্রী ছিলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জিল্লুর রহমান তার সহধর্মিনী আইভি রহমানকে হারান। পারিবারিক জীবনে এক পুত্র এবং তানিয়া ও ময়না নামে দুই কন্যা সন্তানের জনক।বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তাঁর পুত্র সন্তান।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন বাড়ীর পাশের ভৈরব আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । এখান থেকে পাশ করে ১৯৪১ সালে তিনি ভৈরব কে.বি পাইলট মডেল হাই স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন ১৯৪৬ সালে। তারপর ঢাকা কলেজ থেকে তিনি আইএ পাশ করেন। জিল্লুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন তখম ফজলুল হক হলের জিএস ছিলেন। জিল্লুর রহমান ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৫৬ সালে কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়াও জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগের একাধিক বার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ বিভিন্ন সময়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণ-আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ( এলজিআরডি) মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় মহাজোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। জিল্লুর রহমান কিশোরগঞ্জ-৬ আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য হন এবং জাতীয় সংসদে সংসদ উপনেতা নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয় এবং তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ২০১৩ সালের ২০ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কান্ডারী, সাবেক রাষ্ট্রপতির ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

Check Also

জাতীয় পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে : হাসনাত-সারজিস

জাতীয় পার্টিকে ‘জাতীয় বেইমান’ অ্যাখ্যা দিয়ে দলটি নিশ্চিহ্ন করা ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।