সাতক্ষীরায় জামায়াতের ২৫ নেতাকমীর নামে মামলা: গেফতার ২

ক্রাইমবাতা রিপোট:  সাতক্ষীরা : জামায়াত শিবির সন্ধেহে সাতক্ষীরায় ২ জন কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রুবার বিকেলে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার কৃতরা হলো, সাতক্ষীরা শহরের চাললেতলা বাগানবাড়ি এলাকার আতিয়ার রহমানের ছেলে আছাদুর রহমান(৫২) ও একই এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে রফিকুল ইসলাম। এছাড়া এই মামলায় সাতক্ষীরা শহর জামায়াতের আমীর ওমর ফরুক,সেক্রেটারী জাহিদুল ইসলামসহ ৮ নেতাকমীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫জনকে আসামী করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে(১৫(৩)/২৫(ডি) ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে সাতক্ষীরা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ২৫ মার্চ শুক্রুবার সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই মো: দেলওয়ার হোসেন বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৯৬৭ (২৫/০৩/২২)। মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, ২৫ মার্চ দুপুর ৩টার দিকে চালতেতলা মোড়ের স্টার রাইচ মিলের সামনে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী রা সাতক্ষীরা জেলার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত মাওলানা আবদুল খালেকের মামলার রায় আন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঢাকা হতে ঘোষণা কে কেন্দ্র করে সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে সরকার বিরোধী নাশকতা মুলক কার্য করার জন্য অবস্থান করছে।এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার এঁর দিক নির্দেশনা মোতাবেক ডিবির ওসি বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে এসআই শিমুল হালদার, এসআই ইন্দ্রজিত, এএসআই মাজেদ,এএসআই ইমামুল মোল্যা ও সঙ্গীয় ফোর্স বৃহম্পতিবার রাতে চালতলা এলাকায় স্টার রাইচ মিলের পাসে অভিযান চালিয়ে আসাদুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম আটক করে।
সাতক্ষীরা জেলা ডিবির অফিসার ইনচার্জ বাবুল আক্তার জানান, আটককৃতদের কাছ থেকে ৫টি বাঁশের লাঠি,৩টি লোহার তৈরি রড, প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকে ৩০টি ছোট বড় ইটের টুকরো উদ্ধার করা হয়। ডিবির ওসি জানান,পলাতক ব্যক্তি সহ আরো ২০-২৫ অজ্ঞাতনামা আসামীদের নাম-ঠিকানা ও পরিচয় যাচাইবাছাই চলছে।পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যহত আছে। তিনি আরো জানান,আটককৃত আসামীদ্বয় সহ পলাতক আসামীদের নামে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) /২৫ উ ধারায় সাতক্ষীরা থানায় মামলা দায়ের পূর্বক আসামীদ্বয় কে বিঞ্জ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়,সাতক্ষীরা অঞ্চলের গণ-মানুষের প্রিয় নেতা ও সাবেক এমপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীরএকন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সাবেক সদস্য, সাতক্ষীরা জেলার সাবেক আমীর, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল খালেক মন্ডলের বিরুদ্ধে ন্যায়ভ্রষ্ট রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখা । বৃহস্পতিবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের চালতেতলা মোড় থেকে শুরু হয়।পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয় বিক্ষোভ মিছিলটি। মিছিলের নের্তৃত্বদেন সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক গাজী সুজায়েত আলী। মিছিল পরবর্তি প্রতিবাদ সভায় তিনি বলেন,সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল খালেক মন্ডলের বিরুদ্ধে আনীত সরকারের অভিযোগের সাথে তাঁর ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতাও নেই। অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল খালেক মন্ডল সাতক্ষীরা অঞ্চলের একজন অবিসংবাদিত নেতা। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ছাত্র জীবনের সকল পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। কারাগারের বন্দী জীবনে তিনি কুরআন হিফজ করেন। সাতক্ষীরার মানুষ তাঁকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। সরকার তাঁর প্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। সরকার পক্ষ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে গঠিত অভিযোগের পক্ষে যেসব ডকুমেন্ট দাখিল করেছেন তা সত্য নয়। তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা। সরকার তাঁর বিরুদ্ধে কল্পকাহিনী তৈরি করে, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায়ে সাজানো মামলায় তাঁকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার ব্যবস্থা করেছে। আমরা অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল খালেক মন্ডলকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ জামায়াত নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা দায়ের করে। এ মামলায় যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা কেউ জামায়াত শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট নই বলে গ্রেফতারকৃতের পরিবারের সদস্যরা জানান।
এর আগে সরকার কর্তৃক মদের উন্মুক্ত লাইসেন্স দেয়ার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে ইসলামবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে গত২৩ ফেব্রুয়ারী বুধবার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাতক্ষীরা শহরের মিলবাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা। মিছিলের নের্তৃত্বদেন শহর জামায়াতের আমীর ওমর ফারুক। মিছিলকে কেন্দ্র করে রাতে জামায়াতের ৩ নেতাকে আটক করে পুলিশ। পরে নাশকতার অভিযোগে বিএনপি জামায়াতের ২০ নেতাকমীকে আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিমেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ।

Check Also

গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিএনপিতে নেয়া হবে না : মির্জা ফখরুল

যারা গণহত্যার সাথে জড়িত ছিল তাদের বিএনপিতে নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।