স্থানীয়রা জানায়, ২০শে মার্চ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার দিনমজুর অসোক আলীর মেয়ে শারমিন খাতুনের সঙ্গে সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহার তার দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে আব্দুর রহমানের বিয়ে দেন। প্রথম কয়েকদিন বিষয়টি গোপন থাকলেও স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
সরেজমিনে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, মেহেদি রাঙা হাতে ক্লাস করছেন শারমিন খাতুন। বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ‘এক সপ্তাহ আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে জামাই আমাদের বাড়িতে আছে। আমি বাড়িতে এসে স্কুলে ক্লাস করছি।’
এ সময় ক্লাস নিচ্ছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামসুন্নাহার। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে নিজের ছেলের বাল্যবিবাহ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালো না। বিশেষ করে আমার মায়ের খুব শরীর খারাপ। মায়ের ইচ্ছা নাতি ছেলের বউ দেখার। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করার জন্যই ছেলের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছি। তবে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়নি। বেগমপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিয়ের বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘একজন স্কুলশিক্ষিকার এ ধরনের অপরাধ কাম্য নয়।’
বিয়ের কাজি মফিজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিয়ে আমি পড়াই নি। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বাল্যবিবাহের বিষয়ে জানতে চাইলে বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘বেগমপুর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ বদ্ধপরিকর। একজন স্কুলশিক্ষিকা কীভাবে এই ধরনের কাজ করতে পারে আমার বুঝে আসে না।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে হবে। আর এই বিষয়টি আমাদের দেখার দায়িত্ব না।’