সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফল নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তার কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ। তিনি বলেছেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হয়েছে, দুই সপ্তাহেও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। ৫০ বছরের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা। এটা হতে পারে না। এটা বিরাট লজ্জার।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
পরে হারুনের বক্তব্যের জবাব দিতে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনা নিয়ে সদস্য ও প্রার্থীদের আপত্তি আছে। এ বিষয়ে কী হবে তা সমিতি ঠিক করবে। গতকাল তারা সভা করেছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং সাবেক সভাপতি-সম্পাদ কেরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটি কীভাবে নিষ্পত্তি করবেন। এটি সরকারের ঘাড়ে চাপানো ঠিক হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। ১৭ মার্চ বিকাল সাড়ে ৪টায় ভোট গণনা শুরু হয়, চলে রাত পর্যন্ত।
তখন পর্যন্ত সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির এগিয়ে ছিলেন। আর সম্পাদক পদে বিএনপি-সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস (বর্তমান সম্পাদক) তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে কিছু ভোটে এগিয়ে ছিলেন।
ওই রাতে একপর্যায়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে নির্বাচন পরিচালনা–সংক্রান্ত আহ্বায়ক কমিটির কাছে আবেদন করেন। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে হইচই-হট্টগোল হয়।
একপর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মসিউজ্জামান সমিতির কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র দেন। এর পরই ভোটের ফল ঘোষণা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
সমিতির নিয়মানুযায়ী, বর্তমান কমিটির মেয়াদ বৃহস্পতিবারই শেষ হচ্ছে। নতুন কমিটি ১ এপ্রিল দায়িত্ব নেওয়ার কথা।
এর আগে সংসদে পৌর বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির হারুন বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো ক্যানসারে আক্রান্ত। স্থানীয় সরকারগুলোর বিরাট একটি অংশের প্রতিনিধি বিনা ভোটে নির্বাচিত, বিরাট অংশ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে নির্বাচিত। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মানুষ এমন স্থানীয় সরকার আশা করেনি। সংবিধানে সব পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কথা বলা আছে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে না পারলে সে জন্য সরকার দায়ী। প্রতিনিধিদের সরিয়ে দিয়ে সরকারদলীয় লোকদের বসানোর জন্য এই সংশোধন করা হচ্ছে। তিনি এটাকে ‘বাকশালি পদ্ধতি’ চালুর চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেন।