গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন সুস্বাদু জাতের আম উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সারা দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে নওগাঁ। ইতোমধ্যেই এই জেলা আমের রাজধানী হিসাবে বেশ সুখ্যাতি লাভ করেছে। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে নওগাঁয় উৎপাদিত আম বেশ সুস্বাদু হওয়ায় দিন দিন এ জেলায় উৎপাদিত আমের চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনি গড়ে উঠছে নতুন নতুন আম বাগান।
চলতি মৌসুমে নওগাঁয় আমের আশানুরূপ উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন চাষি ও বাগানিরা। আর তাদের এই শঙ্কার কারণ হলো দীর্ঘসময় অনাবৃষ্টি। চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খরার কারণে ঝরে যাচ্ছে আমের গুটি। বিশেষ করে আম্রাপালি জাতের আমের গুটি ঝরে যাওয়ার চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাগানিরা ওষুধ প্রয়োগ করেও এই সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না। সাপাহার, পোরশা ও পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে আমের গুটি ঝরে পড়ার একই চিত্র দেখা গেছে।
পত্নীতলা উপজেলার পলিপাড়া গ্রামের আমচাষি আব্দুল আজিজ জানান, তিনি ১২বিঘা জমিতে আম্রপালি ও বারি-৪ জাতের আম লাগিয়েছেন। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আম্রপালি জাতের আমের সবগুটি এবং বারি-৪ জাতের গুটি ৮০ ভাগ ঝরে গেছে। গাছে ওষুধ প্রয়োগ করেও লাভ হচ্ছে না।
পোরশা উপজেলার কাতিপুর গ্রামের আমচাষি রাশেদ জানান, তিনি ১৪ বিঘা জমিতে আম গাছ লাগিয়েছেন। এর মধ্যে ল্যাংড়া জাতের ২ বিঘা বাগানের আমের সকল গুটি ঝরে গেছে। অন্য জাতের আমের গুটিও কমবেশি ঝরে গেছে। যেভাবে আমের গুটি ঝরে পড়ছে তাতে আম ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এ চাষি।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সামসুল ওয়াদুদ জানান, চলতি মৌসুমে নওগাঁয় ২৯ হাজার ৩শ ৭৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ৮০ভাগ জমিতেই রয়েছে আম্রপালির বাগান। অবশিষ্ট জমিতে ল্যাংড়া, বারি-৪, নাগ ফজলি, কাতিমন ইত্যাদি জাতের আম রয়েছে। এ বছর আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪শ ৩৫ মেট্রিক টন। দীর্ঘ সময় অনাবৃষ্টির কারণে আমের গুটি ঝরে পড়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হলেই সমস্যার সমাধান হবে। আমের গুটি ঝরে গেলেও সার্বিক উৎপাদনের উপর খুব একটা প্রভাব পড়বে না বলেও মতবাদ ব্যক্ত করেন এই কর্মকর্তা।