বশেমুরবিপ্রবি লেক পাড়: অনিন্দ্য সুন্দরের প্রতিচ্ছবি

শেখ রাসেল, বশেমুরবিপ্রবি

প্রকৃতি ও মানব একে অপরের সঙ্গী। একটি ছাড়া অন্যটি যেনো অসহায়। সাধারণত প্রকৃতির অফুরন্ত সৌন্দর্য মানবমনের অফুরন্ত সৌন্দর্যের উৎস। বলা হয়ে থাকে, সময় যেমন তার আপন গতিতে চলে, তেমনি প্রকৃতি তার নিজের গতিতে চলে। শীত যায় হেমন্ত আসে, গ্রীষ্ম যায় বর্ষা আসে, এভাবে নানা বৈচিত্র্যে আমাদের মাঝে হাজির হয় প্রকৃতি।

চারিদিকে রাধাচূড়া, গোলাপি জবা, বউ চূড়া, সাদা গোলাপ, লাল গোলাপ, বেলি, গাধাসহ নানা রঙের ফুল। মাঝখানে জলরাশি একপাশে তার ছোট্ট মুগ্ধ করা সাজানো পাহাড়। এসবের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এক মন জুড়ানো পরিবেশ। সূর্য যখন তার আপন ঠিকানায় ফিরে যেতে চায় ঠিক তখনই লেকের পানিগুলো তার রশ্মি ছড়ায়। এ যেনো প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্যে মাখা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) লেক পাড়।

এই লেকে পড়ন্ত বিকালে দক্ষিণা বাতাসের ফুলের গন্ধে ভরে উঠে মন। সেই আদি যুগ থেকে মানুষ প্রকৃতির প্রেমে পড়ে আসছে। প্রকৃতির মাঝে গিয়ে নিজে, জীবন সঙ্গী, প্রেমিক প্রেমিকা অথবা ভালোবাসার মানুষটার সঙ্গে একটু সময় কাটানো খারাপ কিসের। এজন্য কবি বলেছেন…

‘প্রকৃতি হাতছানি দিয়ে ডাকে
হারাতে ইচ্ছে হয় পাহাড়ি নদীর বাঁকে,
দুর্গম পথ পেরিয়ে পাহাড় জয়ের নেশা,
প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্যে নিজেকে ভালোবাসা।’

সূর্যের রশ্মি কম হলে প্রতিদিনই এই লেকে দেখা মিলে শত মানুষের। প্রেমিক প্রেমিকা দুজনে বসে বসে তাদের মনে কথা বলে। কেউ কাউকে না ছেড়ে যাওয়ার কথা বলে, একটু আলতো করে আমি তোমাকে ভালোবাসি বলে জীবন অতিবাহিত করে দেওয়ার কথা বলে, কেউবা একই জায়গায় বসে একই ভাবে বলে ভালোবাসি, পরিবর্তন হয় শুধু মানুষ ও সময়।

অপরদিকে যদি আপনার মন খারাপ হয়ে থাকে, কিছু ভালো না লাগে, পরীক্ষা-অ্যাসাইনমেন্টের ঝামেলায় আছেন, চলে আসেন বশেমুরবিপ্রবির লেক পাড়ে, ফুলের সুবাস মাখানো দক্ষিণা বাতাসে মূহুর্তে আপনার মনটা ভালো হয়ে যাবে। সাথে সাথে মনে হতে পারে এই শিরোনামহীন বিকালে যদি কোনো প্রিয় মানুষ থাকতো, যে একটু ছুয়ে দিয়ে বলবে এইতো আমি আছি পাশে।

আর যদি আপনি একা থাকতে চান তাহলে প্রকৃতির মাঝে মিশে যান কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যান প্রকৃতির মাঝে দেখবেন মন ভালো হয়ে গেছে। কিন্তু বেশি সময় অতিবাহিত করতে চাইলে নিজেকে একাকিত্ব মনে হবে। তখন মনে হতে পারে কোথায় যেনো শূন্যতা রয়ে গেছে।

দিন অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে এই লেক পাড়ের মানুষ গুলো পরিবর্তিত হতে থাকবে। কেউ আসবে কেউ চলে যাবে কিন্তু লেক পাড়টা রয়ে যাবে। কর্মব্যস্ত এই শহরে যদি কোনো একদিন আবার দেখা হয় এই অপরুপ সৌন্দর্য্যের সাথে সেদিন স্মৃতি গুলো মনে পড়তেই চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে একফোটা জল।

Check Also

আশাশুনির কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ধ্বস।।আতঙ্কিত এলাকাবাসী

আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিতএস,এম মোস্তাফিজুর রহমান(আশাশুনি)সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।।আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের মাসিক রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।