আবু সাইদ বিশ্বাসঃ দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। খুশির বার্তা নিয়ে আমাদের হাজির। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে মুমিন-মুসলমানদের জন্য রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে প্রতি বছর আসে মাহে রমজান। এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন মুমিন আধ্যাত্মিক উন্নতির সাথে সাথে শারীরিক সুস্থতা লাভেরও সুযোগ পায়। তবে সিয়ামের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন। একজন মানুষ তাকওয়ার গুণ অর্জন করার মাধ্যমে পরিপূর্ণ মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন হন। তার মানবিক গুণাবলী তাকে সকল অন্যায়, অনাচার, পাপাচার থেকে দূরে রাখে। যে সমাজ ও দেশে তাকওয়ার গুণাবলীসম্পন্ন মানুষ যত বেশি, সেই দেশ ও সমাজ তত শান্তিময়। এজন্যই আল্লাহ তায়ালা মাহে রমজানে সিয়াম বা রোজা ফরজ করা সম্পর্কে বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদের জন্য সিয়ামকে ফরজ করেছি, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর করেছিলাম যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ এখন প্রশ্ন হলোÑ এক মাস সিয়ামের লক্ষ্য কী আমরা অর্জন করতে পেরেছি, নাকি শুধু ক্ষুধা আর পিপাসায় কষ্ট করেছি। এই প্রশ্নের উত্তরের প্রতিফলন আমাদের জীবনে প্রতিফলিত হবে ঈদুল ফিতরের দিন থেকেই।
আমরা জানি, মহান আল্লাহ নিজেই মাহে রমজানের সিয়ামের পুরস্কার। রাসূল সা.-এর হাদীসের ভাষ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি এভাবেই বলেছেন। তিনি নিজ হাতে পুরস্কার দেবেনÑ এতটুকুই নয়, বরং তিনি নিজেই পুরস্কার। অর্থাৎ সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন বান্দা তার মহান রবের সান্নিধ্য অর্জনের বিশাল সুযোগ লাভ করে। আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত বান্দার বাকি জীবনের লক্ষ্য থাকে তাঁর দেয়া সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে চলা। এই মাহে রমজানেই মানবজাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার পাঠানো সর্বশেষ হেদায়াতগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল হয়েছে। মানবতার মুক্তির দূত সর্বশেষ নবী ও রাসূল হজরত মুহাম্মদ সা.-কে তিনি পবিত্র কুরআন দিয়েছেন। আমাদের প্রিয় নবী সা. একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে আল্লাহ প্রেরিত গাইডবুক পবিত্র কুরআন তাঁর নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত মদিনার কল্যাণরাষ্ট্রে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করেছেন। বিনা রক্তপাতে তিনি তার পবিত্রতম জন্মভূমি মক্কা বিজয় করেছেন। তিনিই আমাদের জন্য একমাত্র আদর্শ মানব। তাঁর দেখানো পথে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালিত হলে জান্নাতি সুখ-সমৃদ্ধি আসবে প্রতিটি জীবনে। এক মাস সিয়াম সাধনা এ শিক্ষাই আমাদের দেয়। পবিত্র ঈদুল ফিতর এই শিক্ষার আলোকে বছরের বাকি মাসগুলো চলার শপথ নেয়ার দিন।
আসুন, আমরা সবাই মাহে রমজানের শিক্ষার আলোয় আলোকিত জীবনযাপনের মাধ্যমে আমাদের বাকি দিনগুলো সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরিয়ে তুলি। পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ হানাহানি ভুলে যাই। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকে সত্যিকারে সোনার বাংলায় পরিণত করি। বিশ্বকে করি মানুষের বাসযোগ্য নিরাপদ আবাস। ঈদ মোবারক। তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবার নেক আমল তথা ভালো কাজগুলো কবুল করুন। আমীন।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …