সব্যসাচী বিশ্বাস (অভয়নগর) যশোর:
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার সকল জমির ধান কাঁটার পর তা এখন পানির নীচে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় “আশানি” এর প্রভাবে মেঘবৃষ্টির বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে এমন উপহার প্রকৃতির। যদিও পূর্বে চলছিল তাপপ্রবাহ তা ধানচাষীদের জন্য ছিলো আশীর্বাদ। আর দুই একদিন সময় পেলেই উঠে যেত ধান ঘরের মাচায়। বিলে তাকালে সোনালী ধানের আভা দেখে আনন্দিত কৃষকের মুখের মলিনতা আজ সকল কষ্ট বাড়িয়ে দিচ্ছে। ১০ মে ২০২২ এর আগে হালকা বৃষ্টিতে ততটা ক্ষতি হয়েছিলো না। কিন্তু ১০ মে দুপুরের পর থেকে শুরু করে আশানির প্রভাবে নামা প্রবল বৃষ্টি কাঁটা ধান পানির নীচে তলিয়ে দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকের আহাজারি, সব শেষ, যা করেছিলাম শেষ হয়ে গেছে। সারা বছরের কষ্ট আজ শেষ হয়ে গেছে। প্রান্তিক গরীব চাষীদের শেষ অবলম্বন এই বোরো ধান। সারা বছরের খাবারের চাল আসে এই বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধান থেকে। শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পাথালিয়া গ্রামের ধান চাষী বেলায়েত হোসেন বললেন, কি করবো, কিছু করার নেই সব শেষ মেনে নিতে হবে। চোখের কোনের পানির ফোটা স্পষ্ট করে দেয় কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত সে। পাথালিয়া বিলে প্রায় ৫ একর জমির ধান পানির নীচে। বাঘুটিয়া ইউনিয়নের জয়খোলা গ্রামের পূর্ব এবং পশ্চিমে দুইটি বিলেই জমি আছে সুফল বিশ্বাসের তুলতে পারিনি কাঁটা ধান। পানির নীচে মুখের হাসিটুকু কান্নায় পরিণত। শুভরাড়া ইউনিয়নের ইছামতী গ্রামের চাষী তরুণ বলেন, আর কিছু বাকি নেই, জমানো সকল টাকাপয়সা দিয়ে এবার ধান চাষ করেছিলাম সব শেষ হয়ে গেছে। এভাবে প্রত্যেক চাষির ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করলে দেখা যাবে বিনিয়োগের ৭০% পানির নীচে। কান্নায় ভেঙে পড়ছে চাষীরা দেখার কেউ নেই। বেড়েছে শ্রমিকের দাম। বাকি আশাও শেষ সেখানে। বর্ধিত শ্রমিকের দাম মিটিয়ে ধান তোলা প্রায় অসম্ভব। বেশিরভাগ চাষীরাই হাল ছেড়ে দিয়েছে। কষ্ট করা, অর্থ বিনিয়োগ, সব ধুয়ে সাফ করে দিলো আশানির প্রভাব।