ইয়াছীন আলী সরদার, তালা
সাতক্ষীরার তালায় মুশলধারে বৃষ্টিতে পানের বরজ ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সমুদ্রে নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। তারই প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে সাতক্ষীরার তালায় শুরু হয়েছে মুশলধারে বৃষ্টি। আর হঠাৎ বৃষ্টির ফলে উপজেলার পানের বরজ ও মাঠের বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমানে ক্ষতি হয়েছে তা এখনো সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ও বিল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা আগাম রোপনকৃত ধান কেটে ঘরে তুলতে সক্ষম হলেও নাবিতে রোপণকৃত বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের ধান ঘরে তুলতে পারিনি। এসব জাতের ধান সবেমাত্র কাটা শুরু হয়েছে।
গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হওয়ায় পান চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পারেনি। তবে উৎপাদন খরচ একটু বেশি হলেও পানের দাম ভালো পাওয়ায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ অনেক চাষীর ভাগ্যের চাকা এ বছর ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চাষিরা জানান, পান গাছ লাগানোর ছয় মাস পর থেকেই ফলন পাওয়া যায়। আর একবার লাগানো পান গাছ থেকে প্রায় ২০-২৫ বছর পান পাতা সংগ্রহ করা যায়। ধানসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় পান চাষে লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। যার কারণে কৃষকরা পান চাষের দিকে ঝুকছে। কিন্তু এরই মধ্যে অশনির কারণে বৃষ্টিতে পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের পান চাষী উদয় দে জানান, তার তিন বিঘা জমিতে পানের বরজ ছিল। সোমবারের হঠাৎ হালকা ঝড় ও বৃষ্টিতে বরজ সম্পূর্ণটা মাটির সাথে মিশে গেছে। এতে তার ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালা উপজেলার প্রায় সব কয়টি ইউনিয়নে পান চাষ হয়। এর মধ্যে কুমিরা, মাগুরা, ইসলামকাটি, ধানদিয়া, খলিষখালী, তালা সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পান চাষ হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে তালায় ৪২৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে।
কৃষি অফিস আরো জানিয়েছেন, এ বছর হঠাৎ বৃষ্টিতে পান ও বোরো ধান সহ কৃষি ফসলের কী পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে কাজ চলছে। আমাদের পর্যাবেক্ষণ শেষে এর পরিমান জানা যাবে