সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :-মৌসুম শুরু না হতেই প্রতিবছরের মতো এবারও সাতক্ষীরার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে ‘অপরিপক্ক’ পাকা আম। ‘সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ’ হিসেবে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে সে আম। যদিও সাতক্ষীরার বাজারেই সে পাকা আম এখনো উঠতে শুরু করেনি। আমের ক্যালেন্ডারের হিসাবে সে আম বাজারে উঠতে শুরু করবে চলতি মে মাসের শেষের দিকে। তাহলে এই পাকা আমের উৎস কী?
রাসায়নিক দিয়ে এসব আম পাকানো হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর রাসায়নিক ব্যবহার করে পাকানো হলে তা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে ওঠা এসব আম ল্যাবে পরীক্ষা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এসব আমে কেমিক্যাল পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরেজমিনে,সাতক্ষীরার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে পাকা আমে ভরপুর হয়ে উঠেছে ফলের আড়ত ও ফলের দোকান গুলো। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায় হলুদ-সবুজ আম। প্রতিটি ফলের দোকানেই গোবিন্দভোগ নামে এসব আম বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর প্রতিটি স্থানেই আম কিনতে ক্রেতাদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। ১০ বছর যাবদ ফলের ব্যবসা করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রইচ উদ্দীন সরদার। তার দোকানেও বিক্রি হচ্ছিল হলুদ-সবুজ রঙের পাকা আম, তথা সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ। তিনি বলেন, ‘বাজারে প্রকৃত গোবিন্দভোগ আসতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। সবাই বিক্রি করছে। তাই বাধ্য হয়ে আর দশ জনের মতো অমাকেও বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুবা ক্রেতা এসে ঘুরে যাবে। আমের আরেক বিক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন,সবাই জানে মৌসুম শুরু হয়নি। তারপরও কিনছে। আমরাও বিক্রি করছি। আর বলার সময় বলে বিক্রি করছি যে এখনো আম মিষ্টি নয়। আব্দুল্লাহ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, আড়তে পাকা আমের অভাব নেই। সবাই লাভের জন্য বিক্রি করছে। কাস্টমারও নিয়ে যাচ্ছে। কয়েক দিন ধরে এসব আম বিক্রি শুরু হয়েছে।
পাটকেলঘাটা বাজারের এক আম বিক্রেতা আমের নামই জানাতে পারেননি। আম ক্রেতা মোঃ মফিজুল ইসলাম মিলন বলেন,আমের মৌসুম আসেনি এটা জানি। তারপরও আম কিনলাম। বাড়ির মহিলারা খেতে চাইছে। এসব আম কী স্বাস্থ্যকর এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকার বিক্রি করতে না দিলে এসব আম কেনার ক্ষমতা কি আমার আছে যে বিক্রি করছে তার কী বিক্রি করার ক্ষমতা আছে আম বিক্রি বন্ধ করতে হলে সরকারকেই করতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, এখনও আম ভালভাবে পাকা শুরু হয়নি। কিছু কিছু গাছে দুয়েকটি আম পাকতে শুরু করেছে। যে পরিমাণে আম পাকছে, তা কেবল পরিবারের সদস্যদেও চাহিদা মেটানোর উপযোগী। আমের মৌসুম শুরু হবে এ মাসের শেষ দিকে।
সাতক্ষীরা জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নুরুল আমনি বলেন, সাতক্ষীরায় আগাম জাতের আম গোবিন্দভোগ চলতি মাসের শেষের দিকে উত্তোলন শুরু হবে। নির্দিষ্ট তারিখের আগে কোন জাতের আম উত্তোলন করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমের মৌসুম এখনো শুরু হয়নি। কিন্তু তারপরেও কিছু কিছু আম তো পাকতে পারে। এখন বাজারে যেসব আম উঠেছে এগুলো পরিপক্ক আম নাকি বিশেষভাবে পাকানো হয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখা দরকার।