রাকিব হোসেন, গোপালগঞ্জ :
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বাস-প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে মধ্যে সংঘর্ষে দুই পরিবারের ৫জনসহ ৯ জন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরো ২৪ জন।
আজ শনিবার (১৪ মে) সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা এলাকায় এ মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা ও কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদি হাসান দূর্ঘটনায় নিহত হবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন, কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রামের ফিরোজ মোল্লা, তার স্ত্রী রুমা বেগম, অনিক মিয়া, জেসমিন আক্তার, গোপালগঞ্জ শহরের ডা: বাসুদেব সাহা তার স্ত্রী শিবানী সাহা, ছেলে স্বপ্নীল সাহা ও প্রাইভেট চালক ঢাকার আদাবর থানার দোয়ারী এলাকার আ: রশিদ মিয়ার ছেলে মো: আজিজ মিয়া ও অজ্ঞাত (৪০)।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা ও পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দীকা দূর্ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে নিহত ও আহতদের খোঁজ খবর নিয়েছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে অসুস্থ মাকে দেখতে ব্যক্তিগত একটি প্রাইভেটকারে করে নিহত বারডেম হাসপাতালের ডাক্তার বাসুদেব সাহা স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ আসতেছিলেন। এসময় কাশিয়ানীর ফুকরা থেকে একটি মোটর সাইকেলে করে অনিক মিয়া ও জেসমিন আক্তার গোপালগঞ্জ শহরের দিকে আসছিলো। এতে ঘটনাস্থলে প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এসময় পিছন দিক থেকে আসা বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ঢাকাগামী রাজিব পরিবহনের একট যাত্রবাহী বাস অপর একটি নসিমনকে সাইড দিতে গেলে প্রাইভেটকারের সাথে বাসের সংঘর্ষ ঘটে। এসময় প্রাইভেটকারটি দুমড়ে মুচড়ে মহাসড়কের পাশে ধান মাড়াইরত মেশিনের ওপর ছিটকে পড়ে এবং যাত্রীবাহী বাসটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে ডাক্তার বাসুদবে সাহা, তার স্ত্রী ও সন্তানসহ ৭ জন ঘটনাস্থলে নিহত হন।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় হত-হতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও কাশিয়ানী হাসপাতালে পাঠায়। এসময় হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় আরো দুইজন মারা যান। গুরুতর আহত কলি খানম, দিদার শরীফ, বদর মিয়া, সোবাহান, বায়েজীদ, আর্জু বেগম, কালাম মিয়া, মাহফুজ, কামরুল, ফারুক, মাসুম মোল্লা, হীরা, হাওয়া বেগম, হোসাইন, আঃ রহমান, জোহরা, এসমোতারা, আলিফ, সিফাতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
খবর শুনে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা ও কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসানসহ জেলা ও পুলিশ প্রশসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সড়ক দূর্ঘটনার পর ঢাকা-খুলনা সহাসড়কে প্রায় এক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানিয়েছেন, মহাসড়কে ধান মাড়াই ও দ্রুত গতির কারনে এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ফায়ার-সার্ভিস, পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা দূর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। আমি দূর্ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে নিহত ও আহতদের খোঁজ খবর নিয়েছি। আহতদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের নির্দেশ দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, নিহতদের পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।