বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অরূপ সাহার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি : বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অরূপ সাহার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে অভিভাবক ও এলাকাবাসী। এঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ভুক্তভোগী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক অরূপ সাহা শিক্ষানীতিমালা অমান্য করে নিয়মিত কোচিং করান। ফলে ছাত্রীরা তার কোচিংয়ে পড়তে আসে। এ সুযোগে ছাত্রীদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া, পিঠে হাত দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে তিনি যৌন হয়রানি করেন। এমনকি কয়েকজন ছাত্রীদের কাছে সরাসরি শারিরীক সম্পর্কের প্রস্তাবও দিয়েছেন এই লম্পট অরূপ সাহা। এঘটনায় ভুক্তভোগী একাধিক ছাত্রী বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকার কাছে মৌখিক এবং লিখিত জবানবন্দিও দিয়েছেন।
এদিকে, ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অরূপ সাহা স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী মহলের সহযোগিতায় চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। এমনকি বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদেরও ফাঁসানোর পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, ২৯ মে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা অভিযুক্ত লম্পট শিক্ষক অরূপ সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আবতাবুজ্জামান লাল্টু, গোলাম কবির, বিদ্যুৎসাহী সদস্য সাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক অরূপ সাহা বিদ্যালয়ের যোগদানের পর থেকে প্রায় ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির অর্থ আত্মসাৎ, চাকুরির প্রলোভনে অর্থআত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ রয়েছে রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীরা। এসব ঘটনায় জেল হাজতও খেটেছেন অরূপ সাহা।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সুকান্ত, আশরাফুল, মাসুদুল আলমসহ অনেকেই বলেন, এধরনের চরিত্রহীণ শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো। আমরা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করাকালিন সময়েও এধরনের অভিযোগ করেও কোন বিচার পাওয়া যায়নি। অবিলম্বে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জামিলুজ্জামান জানান, এঘটনায় একাধিক ছাত্রী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জরুরী ভিত্তিতে মিটিং করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ইতোপূর্বেও অরূপ সাহার বিরুদ্ধে ছাত্রীরা একাধিক অভিযোগ করেছিল। কোন ব্যক্তির অপকর্মের দায় প্রতিষ্ঠান বহন করবে না। তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হলে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এধরনের একটি অভিযোগের বিষয় শুনেছি। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অরূপ কুমার সাহা ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা করেছি এবং তাদের মধ্যকার চিঠি চালাচালি বন্ধ করেছি। এছাড়া স্কুল ড্রেস পরে না আসায় একজন ছাত্রীকে বকা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।