ক্রাইমবাতা রিপোট: সাতক্ষীরা পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তাজকিন আহমেদ চিশতিকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে তাজকিন আহমেদ চিশতি মুঠোফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবদুর রউফ মিয়ার বুধবার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানা যায়, ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল ও একই বছরের ১ ডিসেম্বরের দুটি নাশকতা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩১-এর উপধারা (০১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতিকে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। একই সঙ্গে সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ১-কে অবিলম্বে মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
এ ব্যাপারে মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি জানান, বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগের (পৌর) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন। তবে গতকাল পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি তিনি পাননি। তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রামজীবনপুর এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া আরেকটি মামলা রয়েছে। দুটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিলে আদালত তা গ্রহণ করেন। ফলে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিন কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
চিঠিতে আরও জানানো হয়, একই সময়ে ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ৯৪৩ টাকার পৌর কর মওকুফ করা হয়েছে। অধিকাংশ কর মওকুফ করেছেন পৌর মেয়র। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্সের ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৭২৬ টাকা মওকুফ করা হয়েছে। এখানেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়র এককভাবে ট্রেড লাইসেন্সের ফি মওকুফ করেছেন। এসব অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩২-এর উপধারা (১)(ঘ) মোতাবেক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে একই আইনের ধারা ৩১(১) অনুযায়ী সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফিরোজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি পৌরসভার ১০ জন কাউন্সিলর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১০ দফা অভিযোগ তুলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব বরাবর দরখাস্ত করেন। বিষয়টি কয়েক দফা তদন্তের পর মেয়রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। কিন্তু এখনো দাপ্তরিক কোনো চিঠি পাননি।